নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) সাধারণ সভায় শনিবার কাশ্মীর সমস্যা, সীমান্তপার-সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে মদতদান ইস্যুতে পাকিস্তানকে দুরমুশ করল ভারত। বিশ্ববাসীর সামনে পাকিস্তানের (Pakistan) দ্বিচারিতাকে ফের তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের (Pak PM Shebaz Sharif) ভারত বিরোধী বক্তব্যের যোগ্য জবাব দেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো বিনিতো (Mijito Vinito)। তাঁর পাল্টা দাবি, কাশ্মীর ইস্যুতে পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি মিথ্যা, বরং ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্ত-পার সন্ত্রাসে মদত দেয় পাকিস্তান।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ৭৭তম অধিবেশনে বিনিতো বলেন, “এটা দুঃখজনক যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার জন্য এই সভার মঞ্চকে বেছে নিয়েছেন। তাঁর দেশের অপকর্মের দিক থেকে নজর ঘোরাতে এবং ভারত বিরোধী কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিতে, তিনি এই কথা বলছেন।”
১৯৯৩ সালে মুম্বই বোমা বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রী কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী দাউদ ইব্রাহিমকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এনে পাকিস্তানকে তুলোধনা করতেও ছাড়েননি মিজিতো। তিনি বলেন,”যে দেশ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তির কথা বলে, তারা কোনও দিন সীমান্ত-পার সন্ত্রাসে মদত দেয় না। মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আশ্রয়ও দেয় না। আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়ে সে দেশে তাদের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেছে পাকিস্তান।”
গত শুক্রবারই রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে পাকিস্তান বক্তব্য রেখেছিল, তারা ভারত সহ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায়, কিন্তু তার জন্য কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হতে হবে আগে। এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ভারত তার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়, তবে তা হতে হবে সন্ত্রাস, শত্রুতা এবং হিংসামুক্ত পরিবেশে। তিনি এই কথাও জোর গলায় মনে করিয়ে দেন, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল আর থাকবে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের নিয়ে যে মেকি উদ্বিগ্নতা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তাকে কটাক্ষ করে বিনিতো বলেন, যে দেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, তারা আবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে সংখ্যালঘুদের নিয়ে কথা বলছে, তাই তাদের তরফে এই বক্তব্য হাস্যকর। পাকিস্তানে হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মহিলাদের বলপূর্বক অপহরণ এবং বিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গটিও তিনি তুলে ধরেন।
বরাবরই বিশ্বমঞ্চে শান্তির বার্তাবহক ভারত। পাকিস্তানকে তা মনে করিয়ে দিয়ে বিনিতো বলেন, “ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নতি কাঙ্খিত। এটা সর্বোপরি। সেটা অবশ্যই হবে। কিন্তু, তা একমাত্র তখনই সম্ভব হবে, যখন সীমান্তপার সন্ত্রাস বন্ধ হবে, বিভিন্ন দেশের সরকারে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে স্বচ্ছভাবে দাঁড়াবে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণ এবং সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হবে না।”