একটা প্রশ্ন তো ঘুরে ফিরে আসবেই, যে কেন কলকাতা টিভিই (Kolkata TV) হয়ে উঠেছে বিজেপির (BJP) টার্গেট? কেন কলকাতা টিভির মালিক সম্পাদক কৌস্তুভ রায়কে (Kaustuv Ray) বারবার ডাকা হচ্ছে ইডির (ED) তরফে হাজিরা দেবার জন্য? কেন কলকাতা টিভি চ্যানেলের অফিসে দিল্লি থেকে আসা ইডি, ইনকাম ট্যাক্স (Income Tax), বা সিবিআই (CBI) বাহিনী, হিসেব নিকেশে, অ্যাকাউন্টসের কাগজপত্র, ব্যাঙ্ক ডকুমেন্টস নয়, সেসব দেখার ইচ্ছেই ছিল না তাদের, তারা দেখছিল আমাদের সম্পাদকীয় লেখা পত্র। বারবার জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল আমাদের অ্যাঙ্করকে, আপনিই তো চতুর্থ স্তম্ভ পড়েন? তাঁর মোবাইল খুলে চেক করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৪)
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট (পর্ব-৩)
আজ আমাদের মধ্যেই নেই, সেদিনও গুরুতর অসুস্থ আমাদের সিনিয়র সহকর্মী তন্ময় ঘোষকে তাঁর চূড়ান্ত অসুস্থতার কথা জানার পরেও বাড়ি না যেতে দিয়ে চার ঘন্টা জেরা করা হয়েছিল। সাংবাদমাধ্যমের একজন সিনিয়র সাংবাদিকের কাছ থেকে কোম্পানির কোন হিসেব জানতে চাইছিলেন ইডি? কী বলাতে চাইছিলেন। সেই জেরার ধকল না সামলাতে পেরে তন্ময় আরও অসুস্থ হন, হাসপাতালে ভর্তি হন, কিছুদিন আগে তিনি মারা গিয়েছেন। মাঝে মধ্যেই বলতেন, ভাবা যায়? আমাকে জোর করে বলানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে, আপনার মাইনের কত অংশ আপনি ক্যাশে পান? কিছু তো পান? সেটা কত? এটা ইডির কাজ? এটা ইনকাম ট্যাক্স করতে পারে? আমাদের অ্যাঙ্করের ঘরে ৭২ ঘন্টা রেড চলেছে, তারা ৩/৪ ঘন্টার মধ্যেই বুঝে গিয়েছিল কিসসসু নেই, তারপর থেকে তারা ভয় দেখাচ্ছিল, বুটজুতোর শব্দে আর কালাশনিকভ দেখেই ভয় পেয়ে যাবে প্রত্যেকে, এটাই তাদের ধারণা। ৭২ ঘন্টা পরে তারা যখন বেরিয়ে গেল তখন তাদের হাতে কী? একটা পেনসিলও নেই।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট (পর্ব-২)
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট (পর্ব-১)
আমাদের দপ্তর প্রায় বন্ধ করে, সাংবাদিকদের কাজ করতে না দিয়ে তাঁরা আসলে কী করছিলেন? আসলে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা এসেছিলেন, ভয় দেখাচ্ছিলেন। এগুলো আসলে দিল্লির নির্দেশ, মাথা নোয়ানোর নির্দেশ, হয় মাথা নোয়াও, নাহলে হ্যারাস করব, আমাদের সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের জেলে ২০০ দিন হয়ে গেলো, আজ না হয় কাল জামিন পাবেন, কিন্তু তাতেই কি খেলা শেষ হবে? আবার আর একটা হাস্যকর বানানো অভিযোগ তৈরি করা হবে, আবার দপ্তরে বাহিনী পাঠানো হবে, আবার বুটের শব্দ, হাতে একে ফর্টিসেভেন, আবার ভয় দেখানো চলবে। যতদিন না মাথা নোয়াচ্ছে মালিক সম্পাদক, কলকাতা টিভির সাংবাদিকেরা, ততদিন এই ভয় দেখানো চলবে। সেই জন্যেই কৌস্তুভ রায় ২০০ দিন পার হয়ে গেলো, এখনও জেলে। কিন্তু যে প্রশ্ন দিয়ে শুরু করেছিলাম, কলকাতা টিভিই কেন টার্গেট? বলব সেটাও, আগামী কিস্তিতে।
দেখুন ভিডিও: