Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeAajke | উত্তরে মমতা, দক্ষিণে যুবরাজ
Array

Aajke | উত্তরে মমতা, দক্ষিণে যুবরাজ

Follow Us :

গব্বর সিং বলেছিল, গাঁওওয়ালো, গব্বর সিংকে তাপ সে তুমহে এক হি আদমি বচা সকতা হ্যায়, আউর ও হ্যায় খুদ গব্বর সিং। একটু বদলে নিয়ে আমার বলতে ইচ্ছে করছে, মমতাকে হারাতে একজনই পারে সে হল মমতা। সেই ধানজমিতে ধানের চারা রোয়ানোর আটকলমের ছবিটা আজকালে ছাপা হয়েছিল, ভাসছে চোখের সামনে। ভরা বাম জমানায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক চাষির জমিতে চাষ করতে দেবে না সিপিএম, মমতা বলেছিলেন, চলুন, আমি ধান রুইব, দেখি কে আটকায়। এসপি পুলিশের বিরাট বাহিনী নিয়ে হাজির, কাদা জলে নেমে মমতা ধান রুইছেন। হ্যাঁ, ওই জিদ, ওই লড়াই, ওই আত্মবিশ্বাস না থাকলে মমতাকে হারানো সম্ভব নয়, এখনও মমতাকে হারাতে হলে আরেকজন মমতাই দরকার, এবং বিরোধীদের কাছে সেই মমতা নেই। বিজেপির আছে দিলু ঘোষ, আপাতত এতটাই বিচ্ছিন্ন যে নিজের গ্রামে বিজেপির ক্যান্ডিডেট নেই। শুভেন্দু অধিকারী আর সুকান্ত মজুমদার ভাবছেন হাইকোর্ট আর রাজভবনেই লুকিয়ে রাখা আছে ক্ষমতার চাবিকাঠি, একবার হাইকোর্টে যাচ্ছেন, একবার রাজভবনে। কী পেলেন? তিন-চারশো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী? ওঁরা ফোন করে বলবেন আর কেন্দ্রীয় বাহিনী সেই দিকে যাবে? ২০২১ সাল মনে নেই? প্রতিটি বুথে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী, সাত দফার ভোট। তো? কী হয়েছিল? বিজেপির সেটা ছিল স্বর্ণযুগ। ফলাফল আমরা জানি। সেদিনের থেকে আজকের বাংলার রাজনীতিতে পরিবর্তন? কেষ্ট মোড়লের বদলে কাজল শেখ এসেছে, এইটা পরিবর্তন? বামেদের ভোট ফিরছে কি না জানি না, তবে বাম কর্মীরা ফিরছেন। কোথা থেকে? বিজেপির থেকে। এই পরিবর্তনে মমতাকে, তৃণমূলকে হারানো যাবে? ওই যে বললাম, ঠিক এই অবস্থায় মমতাকে হারাতে আরেকজন মমতা দরকার। সেটাই আমাদের বিষয় আজকে। উত্তরে মমতা, দক্ষিণে যুবরাজ।

মমতার ওই লড়াই, ওই জেদ আজ বিরোধীদের একজনের মধ্যেও দেখতে পাচ্ছেন? আমার এক পরিচিত শহুরে মানুষ সুপুরি গাছে ঝুলতে থাকা সুপুরি দেখে বলেছিল অপুষ্টিতে ভুগে নারকেলের কী দশা। মমতার পাশে আজকের বিরোধীদের দেখলে অমন অপুষ্টির কথাই মনে হয়। এবং ক্ষমতায় আসার পরে সেই মমতা আবার সংগঠনেও নজর দিয়েছেন, খানিক বাম আমলের সংগঠন, মধ্যে মধ্যে শুদ্ধিকরণ, মধ্যে মধ্যে ক্যাডারদের সঙ্গে মিটিং, খবরের কাগজ জাগো বাংলা, সঙ্গে আই প্যাকের নজরদারি। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে মমতাকে টেক্কা দেওয়ার মুখ কোথায়? ঠিক জাতীয় রাজনীতির দশা। মোদির বিরুদ্ধে মুখ কোথায়? আবার জাতীয় রাজনীতিতে মূল বিরোধী দলগুলো একসঙ্গে আসার তবু সুযোগ আছে, এখানে বাম কংগ্রেস একটা জোট হতেই পারে কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জোট হবে না। অ্যাডভান্টেজ মমতা, তৃণমূল কংগ্রেস। 

আরও পড়ুন: Aajke | পঞ্চায়েত ভোট আদৌ হবে? 

সেই মমতা এখন উত্তরে, যে উত্তর কিছুদিন আগেই চাষ দিয়ে এসেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। খানিক মেরামতির কাজ আর খানিক গুছিয়ে দেওয়ার কাজ করতে সেখানে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণের প্রচারে অভিষেক, তিনি আবার ঝালাই করে নিচ্ছেন হোম টাস্ক। জানা কথা যে এরপর আবার এই মাঠেই নামবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হ্যাঁ, বাংলায় এটাই সেমিফাইনাল, ২০২৪-এর আগে বড় নির্বাচন, মমতা জানেন, বিজেপিকে সিঙ্গল ডিজিটে পৌঁছে দিতে পারলে দিল্লির দরবারে জোর বাড়বে। অধীর কংগ্রেস লড়ছেন আদালতে এবং খানিক মুর্শিদাবাদে। সিপিএম লড়ছে দ্বিতীয় স্থানের জন্য, পুরনো সংগঠনের শিকড় খোঁজার চেষ্টা, জেতার জন্য প্রয়োজনীয় কিলিং স্পিরিট? না, এখনও দেখা যাচ্ছে না। আর বিজেপি মাঠে কোথায়? কলকাতা থেকে কাজে বীরভূম গিয়েছিলাম, বর্ধমানের ভেতর দিয়ে মেমারি, ভাতার, নানুর, বোলপুর, ওদিকে দুর্গাপুর, কাঁকসা, বুদবুদ, বর্ধমান সিঙ্গুর হয়ে ফিরেছি। ৮ তারিখ ভোট আজ ২৬ তারিখ, কোথায় বিজেপি? মেমারি, ভাতারে কিছু জায়গাতে সিপিএম-এর ফ্ল্যাগ দেখা যাচ্ছে। বিজেপি কই? সকালে উঠে হাইকোর্টে চলে যান, বিজেপি পাবেন। এই ছবি ফলাফলের দিনেও থাকবে। এবং উত্তরে মমতা, দক্ষিণে অভিষেক, রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতারা, এমপি-এমএলএরা মাঠে, সেটা তো এমনি এমনি নয়। ছাপানো প্রোগ্রাম চলে যাচ্ছে, নেতাদের নাম দেওয়া থাকছে ৫-৬ দিন আগে থেকে, মিটিংয়ের জায়গা খালি নয়, সে মিটিং এর খুঁটিনাটির দায়িত্বও ঠিক করে দেওয়া থাকছে। এ এক অন্য তৃণমূল। আমরা মানুষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, প্রচারে কাদের দেখছেন? পোস্টার ব্যানারে কে এগিয়ে? মানুষ কী বলছেন শুনুন।

রাজভবন কেন্দ্রীয় বাহিনী আদালতের রায় দিয়েই যদি নির্বাচনে জেতা যেত তাহলে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতো দুঁদে উকিল বা সুকান্ত মজুমদারের মতো রাজভবন প্রিয় নেতাদের হাতেই থাকত রাজনীতির চাবিকাঠি। আমাদের দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে যাবতীয় ক্ষমতা বদল, সরকারের পতন রাজভবন থেকে হয়নি। বার বার নির্বাচিত রাজ্য সরকার ভেঙেও লাভ হয়নি। মানুষ বদলেছে দিন, মানুষ এনেছে পরিবর্তন আর তার জন্যে মানুষের মাঝখানে থাকা এক নেতাই হয়ে ওঠে পরিবর্তনের মুখ। এ বাংলায় এখনও বিরোধীরা সেই লড়াই লড়তে পারেননি, লড়াই ক্রমশ রাজভবন আর আদালতের চার দেওয়ালে আটকে গেছে। অন্যদিকে এখনও সেই মানুষের কাছে নিয়মিত হাজির মমতা, কখনও উত্তরে কখনও দক্ষিণে, সভায় উঠেই আঙুলের কর গুনে মনে করিয়ে দিচ্ছেন সবুজ সাথী, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কথা, লাগাতার বলেই চলেছেন কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার কথা। পাল্টা ন্যারেটিভ-এর সঙ্গে আরেকটা মমতা না হলে এই মমতাকে হারানো মুশকিল হি নহি না-মুমকিন হ্যায়।

RELATED ARTICLES

Most Popular