শান্তিনিকেতন: গবেষণার (Research) জন্য আবেদনকারী বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) আদিবাসী (Tribal) সম্প্রদায়ের ছাত্রীকে হেনস্থা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগে উপাচার্যের (Vice Chancellor) রিপোর্ট তলব করল জাতীয় তফশিলি উপজাতি কমিশন। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ না করলে ৩৩৮ এ ধারায় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Vidyut Chakraborty) বিরুদ্ধে সমন জারি করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় ১ নম্বরে নাম থাকলেও আদিবাসী ছাত্রী পাপিয়া মাড্ডিকে গবেষণার জন্য নেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে একাধিকবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন উত্তর আসেনি বলে অভিযোগ ছাত্রীর।
বিশ্বভারতীর শিক্ষা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন আবাসিক ছাত্রী পাপিয়া মুর্মু। পরে এমফিলও করেন তিনি৷ পাপিয়া হুগলি জেলার হরিপাল থানার চক চণ্ডীনগর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, গবেষণা করার জন্য তিনি শিক্ষা বিভাগে আবেদন করেন। সেই মতো তফশিলি উপজাতির সংরক্ষণ অনুযায়ী মেধা তালিকায় ১ নম্বরে নাম ছিল তাঁর। তা সত্ত্বেও তাঁকে নানান অজুহাতে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, গবেষণার জন্য তাঁকে নেওয়া হয়নি। কেন তাঁকে নেওয়া হল না তা জানতে চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব, বিভাগীয় প্রধানকে ৩ থেকে ৪ টি চিঠি দেন পাপিয়া। তাঁর আরও অভিযোগ, একটি চিঠিরও উত্তর দেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এমনকি, শিক্ষা বিভাগের এক অধ্যাপিকা দুর্ব্যবহারও করেন৷
এই মর্মে ওই ছাত্রী জাতীয় তফশিলি উপজাতি কমিশনে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করে। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কমিশনে নোটিশে আরও উল্লেখ করে, ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা না দিলে ৩৩৮ এ অনুযায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হবে ও সশরীরে উপাচার্যকে হাজিরা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের অধ্যাপক প্রশান্ত মিশ্রমকে হেনস্থার অভিযোগে সশরীরে কমিশনে হাজিরা দিতে হয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে। এমনকি, এই সংক্রান্ত বিষয়ে উপাচার্য সহ ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব ও আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলা চলছে সিউড়ি জেলা আদালতে। ১৮ জুলাই আদালত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্যোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট ফেসবুকে পোস্ট করে সরব হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা।
তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রী পাপিয়া মুর্মু বলেন, আমার নাম ১ নম্বরে থাকা সত্ত্বেও পিএইচডি করতে পারলাম না৷ একাধিক চিঠি দিয়েছি, উত্তর দেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তারপর আমি কমিশনে ও রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিই। আমি তফশিলি উপজাতির তাই ওরা ভেবেছিল কিছুই করতে পারবে না। তাই ভর্তি নেয়নি ও উত্তরও দেয়নি৷ খারাপ ব্যবহারও করেছেন ম্যাডাম।