কলকাতা: জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) অনুযায়ী রাজ্যে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নিউ কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক (Curriculum and Credit FrameWork) চালু করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে কমিতি গঠন করল শিক্ষা দফতর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের (Suranjan Das) নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এই কমিটি (Committee) গঠন করা হল সোমবার।চার সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে শিক্ষা দফতর ঠিক করবে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে তারা চলবে কি না।
২০২০ সালে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণার পরই রাজ্য সরকার তার বিরোধিতা করেছিল। বলা হয়েছিল, এই শিক্ষানীতি তারা মানবে না। রাজ্য সরকার বিকল্প শিক্ষানীতি তৈরি করবে। তার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ ওঠে সেই কমিটির রিপোর্ট আজ পর্যন্ত দিনের আলো দেখেনি। এরই মধ্যে দিনকয়েক আগে উচ্চ শিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে (University) জাতীয় শিক্ষানীতির নির্দেশ মতো নিউ কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক চালু করার কথা বলে। সেখানে স্নাতক পাঠ্যক্রম তিন বছরের বদলে চার বছর করা হয়েছে। এছাড়াও স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমে অনেক বদলের কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:WBBSE | শোকজের জবাবে ধর্মঘটী শিক্ষকরা ঢাক বাজিয়ে, নেচে নেচে এসআই অফিসে
রাজ্য সরকারের এই নির্দেশিকা নিয়ে শিক্ষা মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সরকার বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নেওয়ার জন্যই উদ্যোগী হয়েছে। শিক্ষা মহলের বক্তব্য, কলেজগুলিতে সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নতি না ঘটিয়ে স্নাতক পাঠ্যক্রম চার বছরের করা সম্ভব নয়। শিক্ষকদের একটা বড় অংশ এই প্রসঙ্গে কলেজ, বিল্ডিংয়ের অভাব, প্রয়োজনের তুলনায় কলেজগুলিতে শিক্ষকের অভাব সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোগত ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন। সব মিলিয়ে সরকার কিছুটা চাপের মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় সরকার এদিন ছয় সদস্যের কমিটি গড়ার কথা জানায়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে তৈরি নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির প্রস্তাবিত খসড়ায় স্নাতক স্তর তিন বছর থেকে বাড়িয়ে চার বছর এবং স্নাতকোত্তর স্তর দুই বছর থেকে কমিয়ে এক বছর করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রেডিড বেসড সিস্টেম প্রয়োগের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্নাতকস্তরেই গবেষণার সুযোগ দিতে হবে। চার বছরের স্নাতকস্তরের কোনও পড়ুয়া যদি কোনও বিষয়ে গবেষণা করতে ইচ্ছুক হন, তা হলে তাঁকে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রজেক্ট বাছাই করতে হবে। অনার্স ডিগ্রির পাওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট বিষয়টিতে গবেষণা করবেন এবং স্পেশালাইজেশন করবেন সেই পড়ুয়া। অন্যদিকে, চার বছরের স্নাতকরা পিএইচডির জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। এর জন্য অবশ্য সেই পড়ুয়ার ন্যূনতম সিজিপিএ ৭.৫ হতে হবে।