ইস্তানবুল: তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে (Turkey-Syria Earthquake) মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজারে পৌঁছল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগান বৃহস্পতিবার ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত আরও তিনটি এলাকা ঘুরে দেখেন। এদিন প্রেসিডেন্ট স্বীকার করে নেন যে, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সরকারি ত্রুটি ছিল। বিপর্যয়ের পর বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে এরকমই অভিযোগ তুলেছিল। এদিকে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সকালেই জানান, ষষ্ঠ ‘অপারেশন দোস্ত’ উড়ান ইতিমধ্যেই তুরস্কে পৌঁছেছে।
এক দশকের মধ্যে বিশ্বে এত বড় ভূমিকম্প হয়নি। ভূমিকম্প বিপর্যস্ত এলাকায় ১০ জন ভারতীয় (Indians) আটকে রয়েছেন বলে বুধবার রাতে বিদেশ মন্ত্রক (MEA) জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন নিখোঁজ। তবে এর মধ্যে আনন্দের খবর হচ্ছে, তুরস্কের কাহরামানমারাস শহর, যেটি ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে, সেখানে ২ জন মালয়ালি (Malayali) বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন। আজমল নামে এক ছাত্র এবং ফারুক নামে এক ব্যবসায়ী বিপদের সাইরেন শুনেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসায় বিপদ থেকে রক্ষা পান।
আরও পড়ুন: Mohanogorer Mohamela: আগামিকাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘মহানগরের মহামেলা’, আমন্ত্রণ সকলকে
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের এক সচিব সঞ্জয় বর্মা জানান, বিপর্যয়ে এখনও কোনও ভারতীয়ের মৃত্যুর খবর মেলেনি। তবে ১০ জন ভারতীয় বিধ্বস্ত এলাকায় আটকে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মোট ৩ হাজার ভারতীয় কর্মসূত্রে তুরস্কে থাকেন। তাঁদের মধ্যে ১৮৫০ জন ইস্তানবুলে (Istanbul), ২৫০ জন আঙ্কারায় (Ankara), বাকিরা অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন।
যে ব্যবসায়ীকে এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তিনি বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) বাসিন্দা। গত ২ দিন ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আমরা তাঁর কোম্পানি ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছি। বর্মা জানান, প্রায় ৭৫ জন ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করে সাহায্যের প্রার্থনা করেছেন।
উদ্ধারকাজে সবথেকে সমস্যা হচ্ছে প্রতিকূল আবহাওয়া। ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় এখন তাপমাত্রা মাইনাস ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই আবহাওয়ার মধ্যে কেউ যদি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকেও থাকেন, বিপর্যয়ের তিনদিন পর তাঁদের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ছোট বাচ্চাদের কম্বলে মুড়িয়ে বাবা-মায়েরা রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছেন একটু উত্তাপের জন্য। কারণ যে তাঁবু ও গাড়ির ভিতর তাঁদের অস্থায়ী আস্তানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে প্রবল ঠান্ডায় কাঁপছে বাচ্চারা।
সময় যত গড়াচ্ছে ততই ধ্বংসস্তূপের নীচে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হচ্ছে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারী দলের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, খাদ্য, জলহীন ভাবে তিনদিন ধরে অক্সিজেন যদিওবা মেলে, কিন্তু এই হিমশীতল আবহাওয়ায় বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।