নয়াদিল্লি: সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানকে নির্দোষ ঘোষণা আদালতের। ঘৃণা ভাষণের মামলায় ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর তিন বছরের সাজা দেয় নিম্ন আদালত। শাস্তি হওয়ায় বিধায়ক পদ খারিজ হয় আজমের। রামপুরের ওই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এমপি-এমএলএ আদালতে আপিল করেন আজম।
বুধবার এমপি-এমএলএ আদালত রায় দেয়, নির্দোষ আজম খান। আজম উত্তরপ্রদেশের রামপুর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন গত বছরের মার্চে। তিন বছরের কারাদণ্ড হওয়ায়। তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছিল ২০২২-এর অক্টোবরে। এর পরেই রামপুরে উপনির্বাচন হয়, জেতেন বিজেপির আকাশ সাক্সেনা। এবার আজম নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আইনি প্রক্রিয়া কোন দিকে যায়, সেদিকে তাকিয়ে অভিজ্ঞ মহল। এর জল অনেক দূর গড়াবে বলে মনে করছে আইনি মহল।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটকে এক নির্বাচনী জনসভায় এক মন্তব্যের জেরে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। ওই সভায় রাহুল মন্তব্য করেছিলেন, সব চোরের পদবী মোদি হয় কী করে? নীরব মোদি, ললিত মোদি, নরেন্দ্র মোদি…। রাহুলের ওই মন্তব্যে মোদি সম্প্রদায় অপমানিত হয়েছে বলে সুরাতের নিম্ন আদালতে মানহানীর মামলা করেন বিজেপির এক নেতা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত রাহুলকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। নিয়ম মতো কোনও সাংসদ বা বিধায়কের ২ বছর কারাদণ্ড হলে সদস্য পদ খারিজ হয়ে যায়। নিম্ন আদালতের ওই রায়ের পরই অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সংসদের সচীবালয় রাহুলের সদস্য পদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এমনকী রাহুলের আকবর রোডের সরকারি বাংলোও কেড়ে নেওয়া হয়। রাহুল নিম্ন আদালত, নগরদায়রা আদালত এবং গুজরাত হাইকোর্টে গিয়েও সুরাহা পাননি। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি জুন মাসে হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন : Barrackpore Incident | ভরসন্ধেয় ব্যারাকপুরের সোনার দোকানে চলল গুলি, মৃত ১
প্রসঙ্গত, আজম খানের বিরুদ্ধে ৯০টির মতো মামলা দায়ের হয়ে রয়েছে। তার মধ্যে দুর্নীতি এবং চুরির মামলাও রয়েছে। এ বছরের শুরুর দিকে প্রতারণা মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু উস্কানিমূলক মন্তব্য মামলায় রেহাই পেলেন না তিনি। এদিন আদালতের রায় ঘোষণার আগে আত্মসমর্পণ করেছিলেন আজম খান। সূত্রের খবর, এই মামলায় আদালতে ২১ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছিল। পেশ করা হয়েছিল মন্তব্যের ভিডিয়োও।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ (দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধাতে প্ররোচনা), ৫০৫ (জনসমক্ষে দুষ্কর্ম করতে বিবৃতি) ধারা এবং রিপ্রেজেন্টেশন অফ পিপলস অ্যাক্ট-এর (১৯৫১) ১২৫ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা। তিন বছরের হাজতবাসের শাস্তির ফলে রাজ্য বিধানসভার সদস্যপদ খোয়াতে চলেছেন তিনি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছিল, কোনও বিধায়ক, বিধান পরিষদের সদস্য কিংবা সাংসদ যদি অপরাধমূলক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয় এবং তার কারাদণ্ড কমপক্ষে দু’ বছর হলেই অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট হাউসের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।