বাঁকুড়া: হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দল বিরোধী ছবি শেয়ার করে বিতর্কে বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক শম্পা দরিপা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারির পর থেকেই তৃণমূল বিরোধী একাধিক পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেসব পোস্টে কখনও তৃণমূলকে আক্রমণ করা হচ্ছে। কখনও আবার পার্থকে। এমনকি অর্পিতা-পার্থর রসায়ন নিয়েও ভাইরাল হয়েছে একাধিক পোস্ট। এবার সেই সব পোস্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করে বিতর্কে জড়ালেন বর্তমানে বাঁকুড়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক শম্পা। বিজেপির দাবি, দল থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন শম্পা। সেই কারণেই এই ধরনের পোস্ট করেছেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে তিনি একের পর এক দল বিরোধী ছবি শেয়ার করেন জিও গাড়ির তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। যে গ্রুপে রয়েছেন জেলার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী-সহ জেলা তৃণমূলের বেশ কিছু নেতৃত্ব।
এইগুলি পোস্ট করার পরই বড়সড় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন শম্পা দরিপা। যদিও পরে তিনি ভুল করে শেয়ার করেছেন বলে দাবি করেন। এমনকি ওই গ্রুপে তিনি নিজের ভুলও স্বীকার করেন। কিন্তু হটাৎ করে শম্পার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে নতুন করে পার্থ কান্ড নিয়ে বেশ জল্পনা তৈরি হয় বাঁকুড়ায়।
শম্পা দরিপা বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৬ বিধানসভায় তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে অভিমানে চলে যান কংগ্রেসে। বাম-কংগ্রেসের জোটের কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পরে অবশ্য তিনি ফিরে আসেন তৃনমূলে। ২০২১ বিধানসভার নির্বাচনে ফের শম্পা কে বাদ দিয়ে তৃনমূল টিকিট দেয় অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শম্পা কে বাদ দিয়ে সায়ন্তিকাকে টিকিট দেওয়াকে ঘিরে শম্পার অনুগামী ও খোদ শম্পাও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। কিন্তু সামান্য ব্যবধানে সায়ন্তিকা পরাজিত হন বাঁকুড়া থেকে। ফলে বিজেপির দখলে চলে যায় বাঁকুড়া বিধানসভা। সায়ন্তিকার হারের কারন হিসেবে শম্পার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের একটা অংশ।
পুরসভার নির্বাচনে শম্পাকে তৃণমূল টিকিট দিলেও চেয়ারম্যানের আসনে তাঁর স্থান হয়নি। একের পর ঘটনা থেকে পরিষ্কার শম্পাকে যোগ্য সম্মান দেয়নি দল তৃণমূল মত অভিজ্ঞ মহলের। চেয়ারম্যানের দৌড়ে এগিয়ে থেকেও শম্পাকে শেষ পর্যন্ত চান্স দেয়নি তৃণমূল। একদিকে বিধানসভায় টিকিট না পাওয়া অন্যদিকে পুরসভায় টিকিট পেয়ে জিতেও চেয়ারম্যানের কুরশি না পাওয়া শম্পা যে দলের কাছে কোণঠাসা সেটা একেবারেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তাই শম্পার মধ্যে অভিমানের পারদ ক্রমশ যে চওড়া হয়েছে সেটা মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পার্থ কান্ডের পর দলের বিরুদ্ধে ছবি ও লেখা একটি গ্রুপে শেয়ার করে সেই পুরানো অভিমানের ক্ষোভ উগরে দিলেন কি শম্পা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। যদিও শম্পার দাবি এটা অনিচ্ছাকৃত। দলের বিরুদ্ধে এই ধরনের পোস্ট শেয়ার দলের কোনও নেতা নেত্রীর করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন বাঁকুড়া শহর তৃণমূলের শ্রমিক নেতার।