সেই ২০১৪ তে বিজেপির নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে ছিল দুর্নীতির কথা, কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক ব্যাপক জনমতকে কাজে লাগিয়েই বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল। এবং আসা ইস্তক এক প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির চূড়ান্ত কাঠামো তৈরি করেছে তারা, নির্বাচনী বন্ডের নতুন আইন এনে, ইডি-সিবিআই-কে কাজে লাগিয়ে, দেশের জল জঙ্গল জমি অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে, সংবাদমাধ্যমের ওপর এক সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে বিজেপি চলছিল আর সেই কারণেই ২০১৯-এর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সর্বত্র রাম মন্দির, বিকাশ, উন্নয়ন ইত্যাদির কথা থাকলেও ছিল না দুর্নীতির প্রসঙ্গ। ২০১৪-তে জনসভায় জনসভায় আমাদের চৌকিদার বলছিলেন না, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। ২০১৯ এ তা ছিল না।
কিন্তু ২০২৪-এর নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশের আগে থেকেই তাঁরা দুর্নীতি নিয়ে সরব, চুন চুন কর জেলে মে ডালুঙ্গার মত ঘটিয়া ডায়ালগ দিচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী, এবং এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারে বিরাট করে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদের কথা বলা হয়েছে। কেন? বিজেপি এই ইস্যু আবার সামনে এনে হাজির করলো কেন? তার কারণ সেই জন্মলগ্ন থেকেই দু-একটা নেতা কর্মীর দুর্নীতির খবর থাকলেও বিজেপি অন্তত এই ক্ষেত্রে ছিল পার্টি উইথ অ্যা ডিফারেন্স। ছিল, আজ আর নেই। এই বিশাল নির্বাচনী বন্ড ঘোটালা বার হয়ে যাবার পরে এখন খুব পরিস্কার যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, দেশের সরকারের সাহায্য নিয়ে এক লুঠমার চলছে সারা দেশ জুড়ে। হুমকি দিয়ে তোলাবাজীর ঘটনা আজ সবার সামনে। ওষুধের দাম বেড়েছে, টাকা গেছে বিজেপির ফান্ডে। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে যারা তারা বিজেপির নির্বাচনী ফান্ডে টাকা দিয়ে রেহাই পেয়েছেন। ভুরি ভুরি উদাহরণ আজ সবার সামনে। চৌকিদার নিজেই ভাঁড়ার সাফ করেছেন, তা পরিস্কার। এর জবাব চাইবে মানুষ এবং সেটা বুঝেই চোরের মায়ের বড় গলা, মোদিজীর নেতৃত্বে বিজেপি আবার নিজেরাই দুর্নীতিকে নির্বাচনী ইস্যু বানিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। নিজেদের এই দেশজোড়া লুঠমারকে আড়াল করার জন্যই এই চুন চুন কর জেল মে ডালুঙ্গার নৈটঙ্কি। আমরা এই দ্বিচারিতার নিন্দা করি, মনে করি এক রাজনৈতিক কারণেই ভুয়ো তথ্য তৈরি করে জেলে পোরা হচ্ছে বিরোধীদের, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মানুষজনদের, একই কারণে আমাদের সম্পাদককে জেলে পোরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৪২)
বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এক বিশুদ্ধ তামাশা, সেটা আমরা বলবো। আমরা জাস্টিস চাই, কেবল আমাদের সম্পাদকের জন্য নয়, দেশ জোড়া বিরোধী রাজনৈতিক দল, সমাজকর্মী, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, মিডিয়ার সম্পাদককে গ্রেপ্তার করার বিরুদ্ধে আমরা বলে যাবো। লালু যাদব বা তামিলনাড়ুর স্তালিন বা কেরালার পিনারাই ভিজয়ন বা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, হেমন্ত সোরেন সমেত দেশের প্রতিবাদী মানুষজন যে এক ভয়ঙ্কর চক্রান্তের মুখোমুখি সে কথা আমরা বার বার বলবো। বলবো জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।
দেখুন ভিডিও: