হুগলি: ছেলেমেয়ের চাকরির জন্য শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের (Ayan Sil) হাতে নগদ ১০ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ বলাগড়ের বাসিন্দা বাসুদেব ঘোষের (Vasudev Ghosh)। সেই টাকা পুরোটাই জলে যায়। তাঁর মেয়ে বা ছেলে দুজনেই টেট (TET) উত্তীর্ণ। কিন্তু কেউই চাকরি পায়নি। যার কারণে এখন নিজেকেই দুষছেন বাসুদেববাবু।
সোমবার তিনি জানান, ২০১৪ সালের মাঝামাঝি তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া দেওয়া হয়েছিল যে, তাঁর মেয়ে এবং ছেলের জন্য পাঁচ করে মোট দশ লক্ষ টাকা দিলে দু’জনেরই চাকরি হয়ে যাবে। সেই মতো ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাসুবাবু নিজের জায়গাজমি বন্দক রেখে নগদ ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন অয়ন শীলকে। বাসুবাবুর অভিযোগ, টাকা দেওয়া প্রতারিতরা যাতে কিছুই না বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছিল অয়ন। চাকরি দেওয়ার নাম করে যাঁদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল, গাড়ি করে তাঁদের বিকাশ ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকাশ ভবনে নিয়ে গিয়ে সাদা খাতায় সই করে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর কোনও সাড়া মেলেনি। এতদিনেও চাকরি হয়নি দুজনের কারও। বাসুদেব বাবুর আক্ষেপ, প্রতারিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী থেকে নেতা, মন্ত্রী, থানা সকলকেই অভিযোগ জানিয়েও কিছু হয়নি। টাকা যাতে ফিরে পাই তার জন্য সব জায়গায় আবেদন করেছিলাম।কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি।
আরও পড়ুন: Allahabad High Court | যোগী রাজ্যের বাতিল চাকরি বহাল এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে
অয়ন শীলের বাড়িতে শান্তনু ও কুন্তলকে একাধিকবার দেখেছেন বলেও এদিন দাবি বাসুদেববাবু। তিনি শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় ওরফে গুরু কে দু’লক্ষ টাকা, এবং অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে বাকি আট লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এরপর ছেলে মেয়ের চাকরি না হওয়ায়, বহুবার অয়নের চুঁচুড়া ও সল্টলেকের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেও তাঁকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করেন বাসুবাবু।
উল্লেখ্য, টানা ৩৭ ঘণ্টা ম্যারাথন জেরার পর সোমবার ভোররাতে সল্টলেক থেকে গ্রেফতার করা হয় অয়ন শীলকে। তারপর তাঁকে এবং তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি ব্যাগ ভর্তি ট্রলিতে বাজেয়াপ্ত করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তদন্তকারী অফিসাররা। হুগলি জেলার বলাগড়ের তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পরই ইডির স্ক্যানারে আসে অয়নের নাম।