রায়গঞ্জ: চিকিৎসার অভাবে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃত রুবাই রজক(২৩) রায়গঞ্জের উকিল পাড়ার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে কিডনিজনিত সমস্যায় বেশ কিছুদিন ধরে ভুগছিলেন রুবাই রজক। পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসার অভাবে হাসপাতাল করিডরেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এর পরই হাসপতালে চড়াও হন রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। হাসাপাতালে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরিবারের অভিযোগ শুক্রবার রাতে অসুস্থতা বোধ করায় শনিবার ভোর রাতে বাইক চালিয়ে হাসপাতালে পৌছন রুবাই। পরিবারের অভিযোগ, তড়িঘড়ি হাসাপাতালে এলেও কোন রকমের চিকিৎসা পাননি ওই যুবক। তাঁকে বেডে পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়নি। হাসপাতাল করিডরেই ফেলে রাখা হয়। দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেনের জন্য কাতরালেও হাসপাতালের কারও সহযোগিতা মেলেনি। এই অবস্থায় অনেকক্ষণ থাকায় নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বেরতে শুরু হয়। রক্তক্ষরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন রুবাই।
আরও পড়ুন: Abhisekh Banerjee: ‘মানুষ তৃণমূলের কাছে ক্ষোভ উগরাবে না তো কি বিজেপির কাছে উগরাবে?’
হাসপাতালের গাফিলতির জেরেই ছেলে রুবাই রজকের এই মর্মান্তিক পরিণতি বলে ক্ষোভে ও কান্নায় ফেটে পড়েন রজকের মা রুবি রজক। এরপরই হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ডে চড়াও হয় রোগীর আত্মীয় ও উপস্থিত অন্যান্যরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তবে মেডিক্যাল কলেজের মতো একটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিষেবার এই বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নূন্যতম পরিষেবা দিতেও এমন গাফিলতি দেখে যথেষ্ট উদ্বেগে অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা।
উল্লেখ্য, গত বছর স্বাস্থ্যঅধিকর্তাদের সঙ্গে তাঁর একটি মিটিংয়ে জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মেডিকাল কলেজগুলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানতে চান উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ও সব রকম চিকিত্সা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কেন প্রান্তিক জায়গাগুলি থেকেও কলকাতায় রোগীদের রেফার করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়কে তেমনই চাপ বাড়ছে শহরের সরকারী হাসপাতালগুলিতে। এই নিয়ে সতর্ক বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সতর্ক বার্তা কী আদৌ কানে তুলেছেন জেলার স্বাস্থ্যঅধিকর্তারা রায়গঞ্জ মেডিক্যালে কলেজের এই ঘটনাকে ঘিরে এখন এই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।