Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeআজকেবাংলায় বিজেপি আসলে মাছ-মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে?

বাংলায় বিজেপি আসলে মাছ-মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে?

Follow Us :

আজ একটা গল্প বলি। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর গুরুভাইদের বলেছেন আজ তোদের ভাল শিক কাবাব খাওয়াব। মাংস এসেছে, মশলা স্বামীজি নিজেই মাখিয়েছেন, কিন্তু এবারে সমস্যা শিক কই? শিক মিলল না কোথাও, স্বামীজি খুঁজে পেতে কিছু লিচুর ডাল ভেঙে আনলেন, সেই কাঠিতে মাংস গুঁজে তৈরি হল শিক কাবাব, বা বলা ভালো প্রথম কাঠি কাবাব। স্বামীজি তো বটেই তাঁর গুরুভাইরা পরিতৃপ্ত করে খেয়েছিলেন কাঠি কাবাব। এই মানুষটিই বলেছেন, গর্বের সঙ্গে বলো আমরা হিন্দু, আবার বিদেশে গিয়ে বলেছেন যস্মিন দেশে যদাচার, বলেছেন এ দেশে শিব নেত্ত করবে মা কালী পাঁঠার মাংস খাবে, আবার অদ্বৈত বাদ পড়িয়েছেন, এগুলো কি স্ববিরোধিতা ছিল? একেবারেই নয়, খুব সচেতনভাবেই তিনি তাঁর গুরুদেব রামকৃষ্ণের যত মত তত পথের কথাই মেনে চলেছেন। কোথাও কোনও গোঁড়ামি না রেখেই নিজের ধর্মের উপাসনা করেছেন, অন্য ধর্মের কথা শুনেছেন। আজ সেই স্বামীজি থাকলে রাজস্থান, গুজরাত বা মধ্যপ্রদেশ বা উত্তরপ্রদেশে যেতেন, যেখানে হিন্দুত্বের নামে প্রথম আক্রমণ নেমে আসছে মানুষের খাদ্যাভাসের উপর। মানুষ কী খাবে, কী খাবে না তা ঠিক করে দিচ্ছে আরএসএস বিজেপি, তাঁরাও বলছেন গর্ব সে বোলো হাম হিন্দু হ্যায়। কোনজন হিন্দু? আরএসএস–বিজেপির এই বিষ ছড়ানো মানুষজন না বিবেকানন্দ? যেভাবে ফতোয়া দিচ্ছেন বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে বিধায়ক তাতে ভয় হয় এ রাজ্যে ভুল করেও যদি বিজেপির শাসন হয়, তাহলে বাঙালি মাছেভাতে, রবিবারে আলু দেওয়া মাংসের ঝোলে, বিরিয়ানি আর কাঠিকাবাবে থাকতে পারবে তো? সেটাই বিষয় আজকে, বাংলায় বিজেপি আসলে মাছ-মাংস খাওয়া ছাড়তে হবে?

নির্বাচন সবে শেষ হয়েছে। রাজস্থানে, জয়পুরে কাছেই হাওয়ামহল বিধানসভার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন এক মহন্ত বালমুকুন্দ আচার্য। জয়ের পরেই বেরিয়ে এসে জানিয়ে দিয়েছেন রাস্তার ধারে কোনও মাছ-মাংসের দোকান থাকবে না। তাঁকে বলতে শোনা গেছে, এটা কি করাচি নাকি? মানে খুব পরিষ্কার, যাঁরা মাছ-মাংস খাও তারা করাচি যাও। মধ্যপ্রদেশের নয়া মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব শপথ নেওয়ার পরে তাঁর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই জানিয়েছেন, প্রকাশ্য জায়গায় মাছ-মাংস বিক্রি করা যাবে না, তাদের জন্য আলাদা লাইসেন্স দেওয়া হবে, লাইসেন্স ছাড়া মাছ-মাংস বিক্রি করা যাবে না। তিনি জানিয়েছেন, ভারত সরকারের নিয়ম মেনেই নিরামিষ খাওয়ার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে হবে।

আরও পড়ুন: Aajke | বর্ধমান রেল স্টেশনে যান, সেলফি তুলুন

উত্তরপ্রদেশে এ ব্যবস্থা লাগু আছে, বছর ছয়-সাত হল লখনউয়ের অলিতে গলিতে সমস্ত কাবাব আর বিরিয়ানি দোকানের সামনে নো বিফ ঝুলছে, রাস্তার উপরের ঠেলা দোকানগুলোতে পর্দা। গুজরাতে তো বিশেষ এলাকায় না গেলে নিরামিষ ছাড়া গতি নেই। কর্নাটকে শুরু হয়েছিল, এখন চাকা উল্টোদিকে। কেউ নিরামিষ খাবেন না আমিষ, তা এখন ঠিক করে দেবে সরকার। আমি বলছি না এ নিয়ে আলোচনা হবে না। হোক না, নতুন কোনও তত্ত্ব হাজির থাকলে তা আনা হোক, আলোচনা হোক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মানুষের কাছে চিপ সোর্স অফ প্রোটিন হল মাছ, ডিম, মুরগি। আমাদের দেশে দরিদ্র শিশুদের ৮০ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। এটা সরকারি হিসেব, তারপরেও এ ধরনের ফতোয়া জারি করা হচ্ছে। এবং এই ফতোয়ার লক্ষ আমিষ বা নিরামিষ নয়, কে ডিম খাবে কে মাংস খাবে সেটা আসল বিষয় নয়, আসল বিষয় হল ওই করাচি চলে যাও। ভক্তদের ধারণা, আরএসএস-বিজেপির প্রচার দেশের সংখ্যালঘুরাই মাছ-মাংস খায়, তাদের একঘরে করো, তাদের কে হ্যারাস করো আর সেই কারণেই এই বালমুকুন্দ থেকে মোহন যাদব মাছ-মাংসের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করছেন। আপাতত কিছু করার নেই, জো জিতা ওহি সিকন্দর, ওঁরা জিতেছেন, ওঁদের মতো করে চালাবেন, কিন্তু এই বাংলায়? অমিত শাহ এলে না হয় রুটি আর ঝিঙে পোস্ত খাওয়ানো হয়, আম বাঙালি কী করবে? ক’দিন আগে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বলা কাঁথির খোকাবাবু আজ জয় শ্রীরাম না বলে মঞ্চেই উঠছেন না। আদি বিজেপিদের চেয়েও তিনি বেশি বিজেপি এটা প্রমাণ করার দায় তাঁর আছে, নতুন কাকেদের এ দায় থাকে কিন্তু কথা হল এই নোংরা রাজনীতি নিয়ে তিনি কিছু বলবেন নাকি রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে পোলট্রি ফার্মগুলোকে তুলে দেবেন, শনিবার, মঙ্গলবার খাবারে যে চিকেন দেওয়া হয় সেটা বন্ধ করে দেবেন? দেওয়ার ক্ষমতা হবে না কিন্তু এই নোংরামো নিয়ে তাঁর বক্তব্য তো জানা দরকার। নাকি আপাতত চুপ করে বসে থেকে সময়মতো কোপ মারার তালে আছেন কাঁথির এই টাচ মি নট খোকাবাবু? আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি আমিষ খাবার দাবার নিয়ে নানান প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে, কোথাও কোথাও তো দোকান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে এ রাজ্যের বিজেপি নেতাদের কী বলবেন? শুনুন তাঁরা কী বলেছেন।

মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা থেকে আধুনিক পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থার তফাত হল এক আপাত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো, যেখানে মানুষের বহুস্বর অনেকটাই জায়গা করে নিতে পারে। তার খাদ্যাভ্যাস, তার জীবনযাপন ইত্যাদির উপরে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থাকে না। অন্যদিকে ওই মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থায় রাজা যখন যে এসেছে, তার পছন্দই হয়ে উঠেছে সেই রাষ্ট্রের নিয়ম। রাজা বৌদ্ধ হলে প্রজাদের বৌদ্ধ হতে হয়েছে, রাজা শাক্ত বা বৈষ্ণব হলে আবার প্রজাদের জীবন বদলেছে, রাজা মুসলমান হলেও বদলেছে। কিন্তু আমরা সেই মধ্যযুগ পার করে অন্তত সংবিধানে লেখা এক গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি যা অ্যামাদের নিজের ইচ্ছে রুচি মতো খাবার খাওয়ার অধিকার দিয়েছে। আরএসএস–বিজেপি সেই অধিকারও কেড়ে নিতে চায়, বাঙালিকে কি তাহলে বাটিচচ্চড়ি খেয়েই বাকি জীবনটা কাটানোর উপদেশ দিচ্ছেন মাননীয় শুভেন্দু অধিকারী?

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Sandeshkhali News | সন্দেশখালিতে নতুন উত্তেজনা মহিলাদের হাতে ঝাঁটা, কটাক্ষ তৃণমূলের
00:00
Video thumbnail
BJP | 'EVM নিয়ে অভিযোগ বন্ধ করুন', কংগ্রেসকে আক্রমণ বিজেপির
05:32
Video thumbnail
NIA | ফের পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি নেতা খুনের তদন্তে এনআই
08:07
Video thumbnail
Mallikarjun Kharge | 'অধীর চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ না', আক্রমণ মল্লিকার্জুন খাড়গের
07:48
Video thumbnail
Mallikarjun Kharge | 'অধীর চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ না', আক্রমণ মল্লিকার্জুন খাড়গের
07:48
Video thumbnail
CV Ananda Bose | শ্লীলতাহানির অভিযোগে নয়া মোড়, ৩ কর্মীর বিরুদ্ধেই মামলা রুজু পুলিশের
02:59
Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | ‘ভোট চলছে, কী করে অমিত শাহ শেয়ারে টাকা ঢালতে বলেন?’ বিধি ভাঙার অভিযোগ মমতার
42:01
Video thumbnail
Weather Update | আবার বৃষ্টি কবে? কোথায় কোথায় হবে? দেখুন ভিডিও
08:53
Video thumbnail
Mamata Banerjee | সুজাতা মণ্ডলের সমর্থনে জনসভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
12:29
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | শালবনিতে ভোটপ্রচারে শুভেন্দু অধিকারী
03:13