নয়াদিল্লি ও জয়পুর: রাজস্থানে (Rajasthan) তিন দশকের পটপরিবর্তনের পরম্পরা বজায় রেখে ফের ক্ষমতায় ফিরল বিজেপি (BJP)। কিন্তু, এবার লাখ টাকার প্রশ্ন সামনে উঠে আসছে যে, রাজপুত রাজ্য সামলানোর তরবারি কার হাতে যাবে? আপাতত গোলাপি শহরের (Pink City) কেল্লা দখলে চার প্রতিদ্বন্দ্বী সামনে রয়েছেন। তাঁদের একজন হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে (Vasundhara Raje)। তিনি ১ লক্ষ তিন হাজার ১০ ভোটে ঝালরপাটন কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন।
ভোট ঘোষণার পর থেকে বসুন্ধরা মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করছেন। বিজেপির প্রথম সারির নেতৃত্বের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছেন। এমনকী ভোটগণনার আগের রাতেও তাঁকে দিল্লির নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। কিন্তু, শেষমেশ বসুন্ধরা পায়ের তলায় মাটি পাবেন কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট ধন্দ দেখা দিয়েছে। তাঁর পথের একমাত্র কাঁটা জয়পুরের রাজকুমারী দিয়া কুমারী (Diya Kumari)।
আরও পড়ুন: ফের মোদি-জাদু, লোকসভার সেমিফাইনালে ৩-১ গোলে জয় বিজেপির
রাজনৈতিক মহলে হাওয়ামহলের একটা হাওয়া ঘোরাফেরা করছে সেটা হল, জয়পুরের রাজপরিবারের প্রতিনিধি বসুন্ধরার সবথেকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চলেছেন। রাজকুমারী কি শেষপর্যন্ত রাজপুতানার রানির পদে বসতে চলেছেন! রাজকুমারী দিয়া কুমারী হলেন বিজেপির লোকসভা সদস্য। বিধানসভায় প্রার্থী করার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। জয়পুর জেলার বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বিদ্যাধর নগর আসন থেকে ৫৫ হাজার ভোটে জিতেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে দিয়া বলেন, সমর্থক এবং কর্মীরা খুব পরিশ্রম করেছেন। আমরা এই জয় আশা করিনি। আশাতীত জয় পেয়েছি রাজস্থানে। প্রধানমন্ত্রী মোদির উপর সকলের আস্থা রয়েছে, এই জয় তার প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, আমি এখনও একজন সাংসদ। আমাকে মুখ্যমন্ত্রী প্রজেক্ট করছেন সমর্থকরা। এটা তাঁদের অত্যুৎসাহের নিদর্শন। তাঁরা আনন্দে এরকম করছেন। তাঁকে এরপর যে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা তিনি পালন করবেন। তাঁর এই একটা কথাতেই জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।
বসুন্ধরাকে নিয়ে কংগ্রেস (Congress) নেতা শচীন পাইলট দুর্নীতির প্রশ্ন তোলায় বিজেপির অন্দর মহলেই এবারে নতুন মুখ আনার চর্চা চলছে। সেই দৌড়ে রয়েছেন বালকনাথও (Balaknath)। তিজারা বিধানসভা আসনে জিতেছেন তিনি। বালকনাথও বর্তমানে আলোয়ারের সংসদ সদস্য।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ধর্মগোষ্ঠীর সদস্য বালকনাথ। রোহতকের বাবা মস্তনাথ মঠের মহন্ত তিনি। নাথ ধর্মের প্রথা অনুযায়ী গোরক্ষপুরের মঠ প্রধান হলেন জাতীয় সভাপতি এবং রোহতকে মঠ প্রধান হন সহ সভাপতি। সেই হিসেবে যোগীর পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বালকনাথ। যে কারণে তাঁকে রাজস্থানের যোগী বলে ডাকেন অনেকে।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সি পি জোশিও (CP Joshi) মুখ্যমন্ত্রীর লাইনে রয়েছেন। ভোটের প্রচারের দায়িত্ব ছিল তাঁরই কাঁধে। জোশিও সাংসদ। সেই হিসেবে দাবিদার হিসেবে তিনিও কম যান না। সব মিলিয়ে জয়ের ট্রফি হাতে পেলেও রাজস্থানে ভবিষ্যতের কাপ্তান নির্বাচনে বিজেপিকে বেশ বেগ পেতে হতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করবে দিল্লি নেতৃত্বের নেকনজরে কে আছেন তার উপরে।
অন্য খবর দেখুন