কলকাতা: আদালতে জয় পেয়েছিলেন আগেই৷ এবার সরকারি স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেলেন ববিতা সরকার৷ হাইকোর্টের নির্দেশে সোমবার ববিতাকে শিক্ষিকার নিয়োগপত্র তুলে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ এদিন সল্টলেকের আচার্য সদনে আসেন তিনি৷ ববিতা মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিতে চান৷ জানা গিয়েছে, তাঁকে ওই স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে৷ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে ববিতাকে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করতে হবে৷
স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে বেরিয়ে ববিতা বলেন, ‘আজ সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে৷ পরবর্তীতে অ্যাপয়নমেন্ট লেটার দেওয়া হবে৷ অ্যাপয়নমেন্ট লেটার পাওয়ার পরেরদিনই কাজে যোগ দিতে পারব৷’ এই চাকরির জন্য সবার প্রথমে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান ববিতা৷ এরপর নিজের আইনজীবী, আন্দোলনকারী এসএসসি চাকরিপ্রার্থী এবং সর্বোপরি পরিবারকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি৷ তবে অঙ্কিতাকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ববিতা৷
ববিতার জায়গায় নিয়মবর্হিভূতভাবে ওই চাকরি দেওয়া হয়েছিল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকে৷ তাসত্ত্বেও অঙ্কিতার নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে মামলা করেন ববিতা৷ সেই মামলাতে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন৷ পাশাপাশি বেতনের পুরো টাকা দুটো কিস্তিতে জমা দিতে বলেন৷ আদালতের নির্দেশের পরই প্রথম কিস্তির টাকা জমা দেন অঙ্কিতা৷ সেই টাকা জমা পড়বে ববিতার অ্যাকাউন্টে৷ পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ববিতাকে ৩০ জুনের মধ্যে নিয়োগপত্র দিতে হবে৷ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার তিনদিন আগেই নিয়োগপত্র ববিতার হাতে তুলে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷
আদালতের রায় ঘোষণার পর ববিতা জানান, তিনি ওই টাকাটি সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করবেন৷ তাঁর কথায়, স্কুলে পড়িয়ে ওই টাকা আয় করেননি৷ তাই ব্যক্তিগত কাজে ওই টাকা তিনি ব্যবহার করতে চান না৷ সমাজসেবামূলক কাজে ওই টাকা ব্যবহার করতে চান ববিতা৷ অন্যদিকে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে অসম লড়াই চালিয়ে শেষমেশ জয় পাওয়ায় সোশাল মিডিয়ায় ববিতার সমর্থনে পোস্ট উপচে পড়ে৷ সবাই একবাক্যে তাঁর সাহসিকতাকে কুর্নিশ করেন৷ ববিতাও মনে করেন, তাঁর লড়াই বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যকে সাহস জোগাবে৷
আরও পড়ুন: Jadavpur University: অভিযুক্ত অধ্যাপককে বিভাগীয় কাজ থেকে সরানো হল যাদবপুরে