কলকাতা: আরও বিপাকে নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee)। দলের পর এবার চাকরি থেকেও সাসপেন্ড (Suspended) প্রাক্তন তৃণমূল (TMC) যুব নেতা। হুগলির মগরার সন্ধ্যাবাজারের বিদ্যুৎ দফতরে কাজ করতেন তিনি। বুধবার রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের তরফ থেকে নোটিস দিয়ে তাঁকে সাসপেন্ড করার কথা জানানো হয়েছে। সাসপেনশনের পরই শুরু হবে বিভাগীয় তদন্ত। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সরকারি কর্মী ৭২ ঘণ্টার বেশি পুলিশ হেফাজতে থাকলে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। সেই নিয়ম মেনেই সাসপেন্ড করা হয়েছে শান্তনুকে।
জানা গিয়েছে, কর্মরত অবস্থায় বাবার মৃত্যুর পর বিদ্যুৎ দফতরে চাকরি পেয়েছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তনু প্রথমে জিরাটে একটি কসমেটিক্সের দোকান খোলেন। ২০০৫-০৬ সালে মোবাইল রিচার্জের দোকান খোলেন তিনি। ইতিমধ্যে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয় শান্তনুর বাবার। সরকারি নিয়মানুযায়ী, বাবার চাকরিই পান তিনি। এরপর ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারকেশ্বর থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হন। তারপরও চাকরি করতেন বিদ্যুৎ দফতরে। তাঁর অফিসের সহকর্মীদের মতে কড়োলায় বিদ্যুৎ দফতরে প্রথম প্রথম নিয়মিত আসতেন শান্তনু।২০১৪ সালে হুগলি জেলা যুব তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি হন। তারপর থেকেই তাঁর চালচলন বদলে যায়। স্করপিও গাড়িতে চেপে অফিসে আসতেন। সঙ্গে সব সময় থাকত চার পাঁচজন নিরাপত্তা রক্ষী।শান্তনুর সেই সরকারি চাকরি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধীরা। এবার সেই চাকরি থেকেই সাসপেন্ড করা হল তাঁকে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) গ্রেফতার (Arrest) হওয়ার পর থেকেই শান্তনুর নাম সামনে আসে। তাপস মণ্ডলও তাঁর নাম বলেছিলেন। এরপর গত ২০ জানুয়ারি শান্তনুর বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তল্লাশিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি (ED)। মোট সাতবার তাঁকে তলব করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীরা। সেই মতো হাজিরা দেন শান্তনু। গত ১০ মার্চ সপ্তমবার সিজিও কমপ্লেক্সে যান। বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট নাগাদ পৌঁছন। টানা প্রায় সাতঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। বয়ানে অসংগতির অভিযোগে শেষমেশ ওইদিন সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতারির পর মঙ্গলবার তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বুধবার চাকরিও হারালেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা।