নয়াদিল্লি: ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেম দিবসে গো-আলিঙ্গন দিবস (Cow hug day) পালনের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নিল জাতীয় পশু কল্যাণ পর্ষদ (Animal Welfare Board of India) শুক্রবার নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ জানাল, কেন্দ্রীয় পশুপালন মন্ত্রকের নির্দেশে আগের বিজ্ঞপ্তি তুলে নেওয়া হল।
পশু কল্যাণ পর্ষদের ওই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে সারা দেশে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media) মিমের বন্যা বয়ে যায়। বিরোধী দলগুলি বলে, গৌতম আদানির (Gautam Adani) শেয়ার জালিয়াতি এবং তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে দেশ যখন তোলপাড়, তখন তা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই পশু কল্যাণ বোর্ডের এই অদ্ভুত খামখেয়ালিপনা। এখন চাপে পড়ে তারা আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল।
আরও পড়ুন: Teacher Transfer Notification: রাজ্যে শিক্ষক বদলিতে নয়া বিধির বিজ্ঞপ্তি জারি
বিজেপি সূত্রের খবর, দলের অন্দরেও পশু কল্যাণ পর্ষদের এই উদ্ভট বিজ্ঞপ্তি নিয়ে অস্বস্তির পারদ চড়ছিল। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি বিজেপির কোনও শীর্ষ নেতা। দিলীপ ঘোষের মতো রাজ্য বিজেপির যে নেতারা গরুর দুধে সোনা আছে বলে হইহল্লা জুড়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই গো-আলিঙ্গন দিবস নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদাররাও। কেন্দ্রের কোনও নেতা-মন্ত্রীও তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপির অনেক নেতাই ঘনিষ্ঠ মহলে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেন। অনেকেই বলেন, বিষয়টি হাসির খোরাক হয়ে উঠেছে। তারপরই ওই বিজ্ঞপ্তি তুলে নেওয়া হয়।
পশু কল্যাণ পর্ষদ ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের আগে পর্যন্ত তা নিয়ে শুক্রবারও বিজেপিকে কটাক্ষ এবং ব্যঙ্গ করতে ছাড়েনি বিরোধী দলগুলি। শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) বলে, বিলিওনিয়ার শিল্পপতি গৌতম আদানিই তো প্রধানমন্ত্রীর পবিত্র গরু। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, মুল সমস্যাগুলি থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্যই ১৪ ফেব্রুয়ারি গো-আলিঙ্গন দিবস পালন করতে বলেছে। এটা বিজেপির মেকি হিন্দুত্ব এবং মেকি দেশপ্রেম ছাড়া আর কিছুই নয়। সিপিএম সাংসদ এলামারাম করিম বলেন, এটা সরকারের উজ্ভট ভাবনা। দেশের লজ্জা। কংগ্রেস নেতা রজনী পাতিল বলেন, আমি কৃষক পরিবারের লোক। আমি তো রোজই গরুকে আদর করি। শুধু একদিন আদর করি না। দেশে বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি জ্বলন্ত সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এ সবের অবতারণা। বৃহস্পতিবার একই কথা বলেছিলেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত।