কাতার বিশ্ব কাপ শুরু হতে আর বাকি আট দিন। সব টিমই তাদের ২৬ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করে দিয়েছে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবারের বিশ্ব কাপ জয়ের ফেভারিটদের মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব কাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাত্র আটটি দল। সবচেয়ে বেশি বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। পাঁচ বার। তার পর জার্মানি এবং ইতালি চার বার করে। দুবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উরুগুয়ে, আর্জেন্তিনা এবং ফ্রান্স। আর ইংল্যান্ড ও স্পেন এক বার করে। তবে এক মাত্র ব্রাজিল ছাড়া কোনও দেশ পর পর দুবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। তাই ইতিহাস দেখলে ফ্রান্সের চ্যাম্পিয়ন হওয়া মুশকিল। ২০ নভেম্বর কাতার ও ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের বিশ্ব কাপ। ফাইনাল ১৮ ডিসেম্বর।
ফ্রান্সের টিমের কোচ এবারও দিদিয়র দেশঁ। তাঁর অধিনায়কত্বেই ফ্রান্স ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিজেদের দেশে। আবার ২০১৮ সালে দেশঁর কোচিংয়েই ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রাশিয়াতে। বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিলের মারিও জাগালো এবং জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাউয়ার ছাড়া অধিনায়ক এবং কোচ হয়ে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন এমন নজির নেই। দেশঁ তাই কিংবদন্তী। ২০১৪-র বিশ্ব কাপের পর থেকেই তিনি ফ্রান্সের দায়িত্বে। এবার তাঁর কাজটা বেশ কঠিন। কারণ ফ্রান্সের মাঝ মাঠের অবস্থা ভাল নয়। গত বার যাঁরা ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন সেই পল পোগবা, ব্লাইসে মাতুইদি কিংবা এনগোলো কান্তেরা এবার নেই। তাদের জায়গায় যাঁরা এসেছেন তাঁরা একেবারেই নতুন। এদের যোগ্যতা নিয়ে হয়তো কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ফ্রান্সের মতো বিশ্বজয়ী টিমের ভার কতটা তাঁরা বইতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে যাঁরা হাছেন তাদের একেবারে উপেক্ষা করা যাবে না। রিয়াল মাদ্রিদের কামাভিঙ্গা, চেলসির ফোফানা, মার্সেইয়ের গুয়েনডৌজি এবংভেরেতৌ, জুভেন্তাসের র্যাবিয়ট কিংবা রিয়ালের তোচৌমেনির অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই কাজে লাগবে দেশঁর। কিন্তু এটা তো বিশ্ব কাপ। এটাই ওদের সবার প্রথম বিশ্ব কাপ। তাই কতটা তাঁরা দলকে সাহায্য করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
তবে বাকিদের নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা নেই। গোলে হুগো লরিস এবারও ফ্রান্সের ভরসা। গত বিশ্ব কাপেও তিনি ফ্রান্সের গোল পোস্টের নীচে ছিলেন। টটেনহাম হসপারের এই গোলকিপার এখনও কিন্তু বিপক্ষের ত্রাসের কারণ। ডিফেন্সে বায়ার্ন মিউনিখের লুকাস হার্নান্ডেজ, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের রাফায়েল ভারানে, বায়ার্নের বেঞ্জামিন পাভার্ড, এ সি মিলানের থিও হার্নান্ডেজ কিংবা পি এস জির কিমবেপে অথবা লিভারপুলের কোনাতে ফ্রান্সের বিরাট ভরসা। একজনের বদলি আছে। প্রত্যেকেই তাঁদের ক্লাবের হয়ে ম্যাচের পর ম্যাচ দলকে ভরসা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ভারানে এবং পাভার্ড গত বারের চ্যাম্পিয়ন টিমের প্লেয়ার। আর ফ্রান্সের সামনের দিকটা তো সোনা দিয়ে বাঁধানো। গত বারের কিলিয়ান এমবাপে, আঁতোয়া গ্রিজমান কিংবা অলিভার জিরুর সঙ্গে আছেন সদ্য ব্যালন ডি ওর জেতা করিম বেঞ্জামা। আছেন ওসুমানু দেম্ব্লে এবং কিংসলে কোমানও। এদের নিয়ে গোল করার জন্য ভাবতে হবে না ফ্রান্সকে। কিন্তু মাঝ মাঠ তো সমস্যার ফ্রান্সের। তাছাড়া আগেই বলা হয়েছে ব্রাজিল ছাড়া কোনও দেশই পর পর দুবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ফ্রান্সের কাজটা তাই এবার বেশ কঠিন। তার উপর আনভিজ্ঞ মাঝ মাঠের জন্য তাদের কাজটা আরও কঠিন হয়ে গেছে। এই সমস্যা ফ্রান্স কীভাবে মাটায় তাই এখন দেখার।