নয়াদিল্লি: ১৬৬৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঔরঙ্গজেবের নির্দেশে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে মসজিদ গড়ে উঠেছিল। জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা চালিয়ে ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এমন প্রায় ৩২টি নমুনা পেয়েছে, যার ভিত্তিতে বলা যায়, মসজিদ নির্মাণের আগে সেখানে বড় একটি হিন্দু মন্দির ছিল।
সমীক্ষায় এএসআই মসজিদের ভিতরে একটি আধভাঙা প্রস্তরলিপি পেয়েছে। সেখানে পারসি ভাষায় কিছু লেখা রয়েছে। সেই শিলালিপি অনুসারে ১৬৭৬-৭৭ সালে ঔরঙ্গজেবের আমলে এখানে মসজিদ গড়ে উঠেছিল। ওই প্রস্তরলিপিতে একটি বইয়ের নাম লেখা রয়েছে। মাসির-ই-আলমগিরি নামে ওই গ্রন্থটি আসলে ঔরঙ্গজেবের জীবনী। ওই জীবনীগ্রন্থ অনুযায়ী ১৬৬৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ নির্মাণের আদেশ দিয়েছিলেন আলমগির ঔরঙ্গজেব।
আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে উল্লেখ করলেন রাষ্ট্রপতি
এএসআই এই সমীক্ষায় জিপিআর প্রযুক্তি প্রয়োগ করেছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, মসজিদ নির্মাণের আগে এখানে একটি বড় হিন্দু মন্দির ছিল। মন্দির যে ছিল, সে বিষয়ে নিদেনপক্ষে ৩২টি নমুনা পেয়েছে তারা। তার প্রথমটিই হল, দেবনাগরী অক্ষরে লেখা বেশ কিছু শব্দ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিন্দু মন্দিরের স্তম্ভগুলির সামান্য বদল ঘটানো হয়েছিল নতুন নির্মাণের কাজে লাগানোর জন্য।
বৃহস্পতিবার এএসআইয়ের সমীক্ষা রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। সেখানে হিন্দু দেবদেবীর প্রতীক পাওয়া গিয়েছে স্তম্ভগুলিতে। পশুপাখিদের প্রতীকও মিলেছে। যা হিন্দু মন্দিরে থেকে থাকে। মসজিদের পশ্চিম দিকের দেওয়ালটি হিন্দু মন্দিরের প্রমাণ বহন করে। জ্ঞানবাপী মসজিদের উত্তর দিকে হলে একটি কুয়োও পাওয়া গিয়েছে। দেবনাগরীতে লেখা ছাড়াও গ্রন্থ, তেলুগু এবং কন্নড় ভাষাতেও লেখা রয়েছে দেওয়াল-স্তম্ভের গায়ে। পাশাপাশি মহামন্ত্রী মণ্ডপ নামে লেখাও রয়েছে। জনার্দন, রুদ্র এবং উমেশ্বর নামে তিন দেবতার নামও রয়েছে দেওয়াল গাত্রে।
এএসআইয়ের এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই জ্ঞানবাপী মসজিদ-কাশী বিশ্বনাথ মন্দির মামলায় হিন্দুপক্ষ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি এএসআইকে হিন্দুদের হাতের কাঠপুতুল বলে ব্যাখ্যা করেছেন। যাই হোক, হিন্দুদের দাবি, অযোধ্যা নিয়ে রায় ঘোষণাকালে যে তথ্যপ্রমাণ এসেছিল তার সঙ্গে জ্ঞানবাপীর অনেক মিল আছে। একইভাবে মথুরার কৃষ্ণজন্মভূমি মামলাতেও সমীক্ষা হলে এ ধরনের প্রমাণ মিলবে বলে আশা হিন্দুদের।
অন্য খবর দেখুন