লোকসভা ভোটের আগে জেলা স্তরে সভাপতি এবং চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক রদবদল ঘটাল তৃণমূল। অনেক জেলায় পুরনোদেরই নিজ নিজ পদে রেখে দেওয়া হয়েছে। আবার কোনও কোনও জেলায় সভাপতি এবং চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখ আনা হয়েছে। এদিন দলের সম্পাদক পদে নতুন চারজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার সেই রদবদলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা। টাকার বদলে সংসদে প্রশ্ন বিতর্কে মহুয়ার সাংসদ পদ বাতিলের সুপারিশ করেছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। কিন্তু তাকে পাত্তা না দিয়ে মহুয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গৌতম আদানির সঙ্গে লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে এখনও সরব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ পর্যন্ত মহুয়া নিয়ে মুখ না খুললেও তাঁকে জেলা সভাপতি করায় স্পষ্ট হল, দল মহুয়ার পাশেই রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রয়াত বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বীরভূম জেলায় এখনও কাউকে সভাপতি করা হয়নি। বলা হয়েছে, জেলার কোর কমিটি সামগ্রিকভাবে বীরভূমের সংগঠন দেখবে। চেয়ারম্যান করা হয়েছে ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি শাসকদলের বীরভূম জেলার দাপুটে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। তাঁকে এখনও পর্যন্ত সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়নি। তৃণমূলের রদ বদলের তালিকায় সভাপতির ঘরটিতে অনুব্রতর নাম নেই। সেখানে ইংরেজিতে লেখা, core committee to committee । এই শব্দবন্ধের অর্থ কী, তাও স্পষ্ট নয় । এটা নিয়েই বীরভূমে তৃণমূলের অন্দরে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। একদল বলছে অনুব্রতকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হল। আর এক দল বলছে, তাই যদি হত তাহলে নতুন সভাপতির নামও ঘোষণা করে দেওয়া হত।
যদিও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার দিন পাঁচেকের মধ্যেই তাঁকে শিক্ষামন্ত্রী এবং দলের মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু)মল্লিক। তাঁকেও কিন্তু দল মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেয়নি। বরং দলনেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেই বলেন, বালুকে ফাঁসানো হয়েছে।
মুর্শিদাবাদে বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে বসানো হয়েছে বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শাওনি সিংহ রায়কে। তাঁকে রাজ্য সম্পাদক করা হয়েছে। চেয়ারপার্সন করা হয়েছে রবিউল আলম চৌধুরিকে। এছাড়াও আরও একাধিক জেলায় সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদে রদবদল করেছে তৃণমূল। দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই রদবদল। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি মানা হয়নি।
দেখুন আরও খবর: