Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeCurrent Newsআবার হার, সাত নম্বর ম্যাচেও জয়ের মুখ দেখল না ইস্ট বেঙ্গল

আবার হার, সাত নম্বর ম্যাচেও জয়ের মুখ দেখল না ইস্ট বেঙ্গল

Follow Us :

নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফ সি–২       এস সি ইস্ট বেঙ্গল-০

(ভি পি সুহের, প্যাট্রিক ফ্লটমান)

সাত নম্বর ম্যাচেও জয় এল না ইস্ট বেঙ্গলের। উল্টে আবার হেরে গিয়ে তারা নিজেদের পজিশন আরও খারাপ করে ফেলল। ম্যাচের আগে নর্থ ইস্ট ছিল দশ নম্বরে। ম্যাচ জিতে তারা উঠে এল সাত নম্বরে। আর সাত ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেয়ে ইস্ট বেঙ্গল পড়ে রইল সেই তলানিতেই। কদিন আগে এফ সি গোয়া যখন ইস্ট বেঙ্গলের মুখোমুখি হয় তখন তারা ছিল এগারো নম্বরে। সেই গোয়াও ইস্ট বেঙ্গলকে হারিয়ে এখন অনেক উপরে চলে গেছে। নর্থ ইস্টও তাই করল। আসলে এখন ইস্ট বেঙ্গল হয়ে গেছে মুরগি টিম। অন্যদের পয়েন্ট বাড়ানো কিংবা পয়েন্ট পাওয়ার জন্য এত ভাল টিম আর নেই। সাত ম্যাচে সতেরো গোল খাওয়া হয়ে গেল লাল হলুদের। তাদের একজন কোচ আছেন। তিনি আবার রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলের কোচ ছিলেন। সেই ম্যানুয়েল দিয়াসের টিম যদি রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলের হয়ে প্রথম সাত ম্যাচে জয়হীন থাকতেন তবে তাঁকে এত দিন ক্লাব বরখাস্ত করত। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গলের এই দলের ম্যানেজমেন্ট তো ঢোঁড়া সাপ। তাদের পক্ষে প্রতিদিন হার দেখা ছাড়া কিছুই করণীয় নেই। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে রেফারি রাহুল কুমার গুপ্তকে মৃদু ধাক্কা মেরে লাল কার্ড দেখলেন আন্তোনিও পেরোসেভিচ। যার ফলে ২৩ ডিসেম্বর হায়দরাবাদ এফ সি-র বিরুদ্ধে তাঁকে বাদ দিয়েই মাঠে নামতে হবে ইস্ট বেঙ্গলকে।

এগারো দলের আই এস এল-এ একমাত্র ভারতীয় কোচ হলেন খালিদ জামিল। আই লিগে আইজল এফ সি-কে চ্যাম্পিয়ন করার পর তাঁকে ইস্ট বেঙ্গল কোচ করেছিল। কিন্তু তিনি লাল হলুদকে আই লিগ দিতে পারেননি। বরং শেষ দিকে ক্লাবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব খারাপ জায়গায় চলে যায়। সেই অপমান খালিদ যে ভোলেননি সেটা আই এস এল-এ দেখা গেল। গত বছর দুটো ম্যাচেই তাঁর দল হারিয়েছিল ইস্ট বেঙ্গলকে। এবারও প্রথম ম্যাচে তিনিই জয়ী। এবং তিনি দেখালেন কোচিং কাকে বলে। এ বার তাঁর টিমের অবস্থাও ভাল নয়। শুক্রবার ফাতোরদার নেহরু স্টেডিয়ামে তিনি দশ নম্বরে থেকে টিম নামিয়েছিলেন। প্রথম ৪৫ মিনিট তিনি দেখলেন টিমটাকে। মাপলেন ইস্ট বেঙ্গলের ক্ষমতাকে। এবং বিরতির পর তাঁর টিমের দাঁত-নখ বের করে ফেললেন। এবং তাতেই শেষ হয়ে গেল ইস্ট বেঙ্গল। বিরতির পর পুরো ইস্ট বেঙ্গলকে পকেটে পুরে ফেলল নর্থ ইস্ট। তাঁর বেশ খানিকটা সুবিধে হয়ে গেল প্রথমার্দ্ধের মাঝামাঝি ইস্ট বেঙ্গলের সেন্ট্রাল ব্যাক ফ্রানিয়ে পার্সে চোট পেয়ে বসে যাওয়ায়। এমনিতেই ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্সের অবস্থা প্রথম দিন থেকেই খারাপ। তার উপর পার্সে বসে যাওয়ায় টমিস্লাভ মার্সেলার উপর চাপ অনেক বেড়ে নেয়। তাঁর পাশে তখন আরেক বিদেশি আমীর ডেরোভেসিচ। আদতে তিনি মিডফিল্ডার। নতুন পজিশনে একেবারেই বেমানান ছিলেন। তাঁরই দোষে ইস্ট বেঙ্গল প্রথম গোল খায়। ৬০ মিনিটের মাথায় গোল করেন ইস্ট বেঙ্গলেরই প্রাক্তনী ভি পি সুহের। প্রথম ৪৫ মিনিটে যে নর্থ ইস্ট ইস্ট বেঙ্গল গোলে মাত্র তিনটে শট নিয়েছিল, বিরতির পর সেটাই দুই অঙ্কে পৌছে যায়। সুহেরের গোলের একটু পরেই (৬৮ মিনিটে) ফল্টমানের গোল এবং ইস্ট বেঙ্গলের পয়েন্ট পাওয়ার আশার অন্তর্জলি যাত্রা।

তবে ইস্ট বেঙ্গল যে গোল করার সুযোগ পায়নি তা নয়। দুই অর্দ্ধ মিলিয়ে তারাও তিন-চার বার গোলের মুখ খুলে ফেলেছিল। কিন্তু তাদের সামনে বিরাট প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান মির্শাদ মিচু, যিনিও লাল হলুদের প্রাক্তনী। আন্তোনিও পেরোসেভিচ এবং ড্যানিয়েল চিমার মধ্যে তেমন বোঝাপড়া সাত ম্যাচের পরেও গড়ে ওঠেনি। তবু তালেগোলে পাওয়া সুযোগগুলো থেকে গোল করা যেত যদি দুই বিদেশির ভেদশক্তি আরও একটু  ভাল হত। তবে ম্যাচের সেরা কিন্তু নর্থ  ইস্টের মিডফিল্ডার খাসা কামারা। গোটা মাঠটাকে তিনি নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেন। তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি।  আসলে ইস্ট বেঙ্গল মানে যে লড়াই, বিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়ার উদগ্র মনোভাব সেটা এই দলের মধ্যে নেই। তাই প্রতিদিন সমর্থকদের পাওনা হচ্ছে হার, হার আর হার। দেখতে দেখতে সাতটা ম্যাচ হয়ে গেল। এখনও জয়ের মুখ দেখল না ইস্ট বেঙ্গল। এ রকম শোচনীয় পরিস্থিতি কিন্তু কখনও হয়নি। জানুয়ারি উইন্ডোতে হয়তো কয়েকটি বিদেশি পরিবর্তন হবে। তাতে কি খানিকটা হলেও সুরাহা হবে লাল হলুদের? নাকি গত বারের নয় নম্বর দলের ভাগ্যে জুটবে এগারো নম্বরের তকমা?

RELATED ARTICLES

Most Popular