রিয়া মাজী: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় (Bhangar) কলকাতা পুলিশের অধীনে আসছে। বুধবার আলিপুরে আইপিএস অফিসারদের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee ) কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে নির্দেশ দেন, ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি লালবাজার সূত্রের খবর, নতুন ডিভিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা লাগোয় ভাঙড়ের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বহু বছর ধরেই উদ্বিগ্ন প্রশাসন। সেই বাম জমানা থেকে শুরু করে তৃণমূল জমানায় ভাঙড়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনও বদল ঘটেনি। খুন জখম শুরু করে নানা অপরাধের জন্য ভাঙড়ের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে।
বুধবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই ভাঙড়ে কলকাতা পুলিশের আলাদা ডিভিশন করার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে নির্দেশ দেন তিনি। পুলিশের ডিজি অমিত মালব্যকেও এই পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, অশান্ত ভাঙড়কে শান্ত করতে এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার ভাবনা। নয়া ডিভিশন চালুর কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ওই ডিভিশনে মোট আটটি থানা থাকবে। থাকবেন আটজন ওসি। তবে ভাঙড়ের কোন এলাকা কোন থানার আওতায় থাকবে তা এখনও জানা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা সমস্ত দায়ভার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Coochbehar Incident | কোচবিহারে নির্যাতিতার বাবাকে নিয়ে টানাটানি তৃণমূল ও বিজেপির
প্রায় সারা বছরই বোমা গুলির লড়াইয়ে তেতে থাকে ভাঙড়ের বিস্তৃর্ণ এলাকা। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলমাল হয় শাসকদলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিয়ে। সেখানে জমি বাড়ি কেনাবেচা এবং নির্মান সামগ্রিক সিন্ডিকেট ঘরে সক্রিয় সমাজবিরোধীদের বিভিন্ন গোষ্ঠী। রীতিমতো বর্ধিষ্ণু এলাকার জমির দিকে এখন ভাঙড়ের অনেকের চোখ। শাসকদলের নেতা আরাবুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর, মোদাশের হোসেন, শওকত আলি মোল্লা সহ শসকদলের বহু নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। বছর খানেক আগে এক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শওকত মোল্লাকে দাঁড় করিয়ে বলেছিলেন, তোর আবার বাসস্ট্যান্ডের কী দরকার তুই তো বোমা বাঁধিস। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরেও রোখা যায়নি প্রাণহানি। ভোটের গণনাতে হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তিন জনের মৃত্যুও হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ভোট হিংসা নিয়ে বলতে গিয়ে ভাঙড়ের কথা উল্লেখ করেন। ওই এলাকায় লাগাতার অশান্তিতে রাস টানতেই এই সিদ্ধান্ত, বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।