কলকাতা: বিজেপি-র আইনজীবীর দাবি মেনে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের উপরে কোনও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল না কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার কলকাতা পুরভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। তবে, কলকাতার পুরভোটে স্থগিতাদেশ জারি না করলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এদিন তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। এদিন মামলার কোনও ফয়সলা হয়নি৷ আগামী সোমবার ফের শুনানি রয়েছে৷
হাইকোর্টের প্রশ্ন, কলকাতার পুরভোট কবে, তা কমিশন ঘোষণা করে দিয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে কত ইভিএম আছে, তা-ও জানানো হয়েছে। তা হলে, কত দফায় বাকি পুরসভাগুলির ভোট শেষ করা হবে, তা কেন জানানো হচ্ছে না? বিচারপতির প্রশ্ন, বাকি পুরভোট কবে, তা ঘোষণা করা কি সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না? স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট করানো রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বলেও তিনি মনে করিয়ে দেন।
যদিও বিজেপির দায়ের করা এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, কলকাতা ছাড়া ১১১টি পুরসভার ভোট বাকি রয়েছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত বকেয়া পুরসভায় ভোট করতে হবে।
কলকাতা ও হাওড়ায় পুরভোটের দিন ঠিক হওয়ার পরেই বিরোধীরা একদিনে সমস্ত পুরভোট করানোর দাবিতে সরব হয়। বিজেপি তাদের দাবি নিয়ে হাইকোর্টে যায়। এরই মধ্যে হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে পৃথক করতে সরকারের আনা সংশোধনীতে রাজ্যপাল সই না-করায়, হাওড়ায় ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা যায়নি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিককে রাজভবনে ডেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় জানিয়ে দেন, তিনিও একসঙ্গে পুরভোট চাইছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতোই স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, রাজ্য সরকারের অধীন নয়, তা-ও খেয়াল করিয়ে দেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের সঙ্গে কমিশনের এই বৈঠকের পরেই নির্ধারিত দিনে পুরভোট করা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন আইনি জটিলতার কারণে হাওড়াকে বাদ দিয়েই কলকাতায় পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেন। আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে ফের আদালতে যায় বিজেপি। হাইকোর্ট পুরভোট মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কী করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: যদুবংশের মত ধ্বংস হবে বিজেপি, রূপার বিদ্রোহ নিয়ে মন্তব্য সৌগতের
যদিও কমিশনের বক্তব্য, পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করা যাবে না, এমন কোনও নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট দেয়নি। ফলে, আদালত অবমাননার প্রশ্ন নেই। তা-ও শেষ মুহূর্তে হাইকোর্ট কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। আদালত বিজেপির দাবি মেনে এদিন কোনও স্থগিতাদেশ জারি করল না।