ওয়াশিংটন: আন্তঃসরকারি সামরিক জোট (Intergovernmental Military Alliance) ন্যাটো (NATO) চীনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক (Tiktok, Chinese Social Media App)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গত শুক্রবার (৩১ মার্চ) নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গ্যাইনাইজেশন (North Atlantic Treaty Organisation – NATO) তার কর্মীদের উদ্দেশে নির্দেশ জারি করেছে, ন্যাটোর সরবরাহ করা বা মালিকানাধীন কোনও ডিভাইসে চীনা এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে না।
চীনের অন্যতম বহুজাতিক সংস্থা বাইটডান্স (Bytedance) টিকটকের পেরেন্ট কোম্পানি। টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা এই সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ বিভিন্ন দেশের ইউজারদের ডেটা সংগ্রহ ও মজুদ করে এবং তা চীন সরকারকে সরবরাহ করে। চীনের ক্ষমতাসীন চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (Chinese Communist Party – CCP) এইভাবে বিভিন্ন দেশ ও তাদের নাগরিকদের উপর নজর রাখে। ভারতে তিন বছর আগেই টিকটক বন্ধ হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাইনিজ এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ নিষিদ্ধ। আমেরিকা চায়, তাদের দেশ থেকে চিরতরে টিকটকে বন্ধ করতে। কিন্তু সেদেশের তরুণ প্রজন্ম টিকটকে বেশ সক্রিয় এবং অনেকেই টিকটক সেলিব্রেটিও হয়ে উঠেছেন। কিন্তু দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা একটি বড় বিষয়। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন প্রশাসন (US Administration)। সেই কারণে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (Democratic Party) টিকটক ব্যানের (TikTok Ban) পক্ষপাতী তারা।
আরও পড়ুন: Make in India | মুখের উপর না অ্যাপলের, ভারতে আইপ্যাড ও ম্যাকবুক ম্যানুফ্যাকচারিং নয়
এবার মার্কিন নেতৃত্বাধীন ৩০টি স্বতন্ত্র সদস্য দেশের সংস্থা ন্যাটো সাইবার নিরাপত্তা (Cyber Security) সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন (Concern)। সেই কারণে এই জোট টিকটককে ব্যান করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে ন্যাটোর এক সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, ন্যাটোর কাছে সাইবার সিকিউরিটি শীর্ষ অগ্রাধিকারের (Top Priorities) বিষয়। সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য যে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশন (Application) ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি ন্যাটোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জনপ্রিয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম কেবল নিউজ নেটওয়ার্ক (Cable News Network – CNN)-কে ন্যাটো আধিকারিক বলেছেন, “টিকটক ন্যাটো ডিভাইসে অ্যাক্সেসযোগ্য নয়।”
নোটিস জারি করে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকটককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, অনেক আগে থেকেই ন্যাটো মালিকানাধীন ডিভাইসে টিকটক বন্ধ কিছু অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার (Internal Tech Restrictions) কারণে।
চীনা সংস্থা পরিচালিত এই ভিডিয়ো-শেয়ারিং অ্যাপ (Video-Sharing App) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States of America – USA) সরকারি কার্যালয়ে নিষিদ্ধ। এছাড়া, ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র (United Kingdom – UK), নরওয়ে (Norway), ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (European Parliament) এবং ভারত (India) সহ একাধিক দেশে বন্ধ টিকটক। গত ২৯ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর পল ব়্যান্ড পল (Rand Paul, US Republican Senator) টিকটক বন্ধের ক্ষেত্রে বাদ সেধেছেন। তাঁর বক্তব্য, ১৫০ মিলিয়ন ইউজার রয়েছে টিকটকে, এর মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ আমেরিকান। রিপাবলিকান পার্টি যদি ক্রমাগত হারতে চায়, তাহলে টিকটক বন্ধ করতে পারে। চীন যেভাবে বাকস্বাধীনতা (Free Speech) দমন করে, আমেরিকাতেও সেটা করতে হলে টিকটক বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিতে হবে।