Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeলিডভোটের লঙ্কায় মধ্যবিত্তের গলায় খয়রাতির মঙ্গলসূত্র পরাতে পারেন মোদি

ভোটের লঙ্কায় মধ্যবিত্তের গলায় খয়রাতির মঙ্গলসূত্র পরাতে পারেন মোদি

বিরোধী-দশানন বধের 'নির্মল' পরিকল্পনা

Follow Us :

নয়াদিল্লি: অযোধ্যায় পর্যটন শিল্প, পরিকাঠামো, সড়ক ও বায়ুপথে সংযোগের উন্নয়ন, এছাড়াও দেশের অন্যান্য মন্দিরের উন্নয়নে গুচ্ছ প্রকল্প নিয়ে লোকসভা ভোটের গলায় অর্থনীতির মঙ্গলসূত্র পরাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সেই লক্ষ্যেই আগামিকাল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ইন্ডিয়া জোটের দশাননকে বধ করার পরিকল্পনা নিয়ে লোকসভা নামের লঙ্কায় অবতীর্ণ হতে চলেছেন। কিন্তু, অর্থমন্ত্রীর এই ‘নির্মল’ পরিকল্পনার পথে কাঁটা আর্থিক ঘাটতির সমুদ্র।

আরও পড়ুন: চাই করছাড়, কম দাম, চাকরি, কী স্বপ্ন আমজনতার!

একদিকে মূলধনী ব্যয় ও অন্যদিকে আর্থিক ঘাটতি মেটাতে কীভাবে সমুদ্রবন্ধন করবেন, সেটাই আপাতত লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে, ভোটের বাজারে মধ্যবিত্তের মন জয় করতে বেশ কয়েকটি ললিপপ যে ঝুলিয়ে দেবেন, সে বিষয়ে বণিকমহল মোটামুটি নিশ্চিত।

লোকসভা ভোটের আগে ‘অসমাপ্ত’ রামমন্দিরের উদ্বোধন ও রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা যদি হাফ ইয়ারলি পরীক্ষা হয়, তাহলে নরেন্দ্র মোদি সরকারের অ্যানুয়াল পরীক্ষা হবে নির্মলা সীতারামনের বাজেট বই পড়ায়। দক্ষিণ ভারতকে বাদ রেখে গোটা হিন্দি বলয় এবং উত্তর-পূর্ব ভারত বিজেপি বগলদাবা করে রেখেছে। যার অধিকাংশই কৃষিজীবী। অযোধ্যার সাফল্য বা রামধুন গেয়ে যে আমজনতার হাঁড়ির চাল ফুটবে না, তা সহজেই অনুমেয়। ফলে বাজেটে রামরাজত্বের বাসিন্দাদের আর্থিক স্বস্তি না দিতে পারলে সীতার অগ্নিপরীক্ষা যে ফেল মেরে যাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

এমনিতেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের থেকে এবার লড়াইটা এখনও পর্যন্ত কঠিন হয়ে এসেছে। কারণ এবার বিরোধীরা জোট বাঁধার একটা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কংগ্রেস ছাড়া অধিকাংশ বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দল ইন্ডিয়া জোট নামে আনুষ্ঠানিকভাবে এক ছাতার তলায় এসেছে। সে কারণে সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে বিত্তশালী এবং দেশের তাবড় শিল্পপতি থেকে শ্রমিক-কৃষকদের জীবনযাত্রা, ব্যবসায়ে সুরাহা না দিতে পারলে তৃতীয় মোদি সরকারের স্বপ্ন ‘রামনাম সত্য হ্যায়’ হয়ে যাবে। ফলে, এবারে যে নির্মল-কোমল, সাদামাঠা, চোখ ধোয়ানো জনদরদি বাজেট হতে পারে, তা বোঝার জন্য অর্থনীতিবিদ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

কৃষি ও শিল্পের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে বাজেট তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ সীতারামনের কাছে। বিজেপি এবং তার চালিকাশক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘও জানে বৃহত্তর অংশকে, সর্বোপরি মহিলা ভোটারদের হাঁড়ি-হেঁসেলে হাসি ফোটাতে না পারলে নতুন ক্লাসে ওঠা কঠিন হয়ে যাবে।

উল্লেখযোগ্য, ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথমবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন দ্রৌপদী মুর্মু। লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই শেষ বাজেট অধিবেশন। ফলে বিরোধীরাও শেষ কামড় দিতে কোমর বেঁধে থাকবে। ফলে বাজেটে চমক এনে আমজনতার চোখে ধাঁধাঁ ধরিয়ে দেওয়ার প্রয়াস থাকবে সীতার।

সূত্রে জানা গিয়েছে, অযোধ্যা, বারাণসী, প্রয়াগরাজ, মথুরা, কামাখ্যা, বৈষ্ণোদেবী, কেদারনাথসহ চারধাম, অমরনাথ, পুরী, ত্রিপুরেশ্বরী, তিরুপতি, কাঞ্চি, রামেশ্বরম সহ দেশের তীর্থস্থানগুলিতে ধর্মীয় পর্যটন শিল্পে জোর দেওয়া হতে পারে। সেই সঙ্গে মুসলিম তীর্থস্থানগুলির ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেবে সীতারামনের বাজেট।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাতেও বিপুল টাকা ঢালতে পারে সরকার। ২০১৫ সালের জুনে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পের লক্ষ্যপূরণ না হওয়ায় তার মেয়াদ বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারে সরকার।

সীতারামনের কঠিন পরীক্ষা হল মূলধনী ব্যয়, আর্থিক ঘাটতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ, নতুন পদসৃষ্টি ও নিয়োগ, পরিবহণ ও পরিকাঠামো ক্ষেত্র থেকে আয়বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা। এছাড়াও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব রেখে দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদের গরিমা গড়ে তোলার চেষ্টা চালানো হতে পারে। চীন ও পাকিস্তানের বিপদকে শিখণ্ডী করে বিজেপির অর্থমন্ত্রী সীমান্ত অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন।

এছাড়া শিক্ষা, শিশু ও নারী স্বাস্থ্যে জোর দেওয়া হতে পারে। কারণ ১৪০ কোটির ভারতে এই ক্ষেত্রের ভোটার সংখ্যা সবথেকে বেশি। বিশেষত নতুন ভোটারদের শতকরা ৮০ ভাগই পড়ুয়া। তাই তাদের কাছে পৌঁছাতে চেষ্টা করবেন সীতারামন। সুস্থ সন্তানই গড়ে তুলতে পারে মজবুত ভারত কিংবা নারীই দেশের মূল শক্তি— এ ধরনের কোনও স্লোগানে বিশাল বরাদ্দ দিতে পারেন নির্মলা।

অন্য খবর দেখুন

RELATED ARTICLES

Most Popular