কলকাতা: বাবা-মায়ের আইনি লড়াইয়ের মাঝে সন্তানকে রাখবেন না। নিজেদের ইগোর লড়াই থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন। আমেরিকায় জন্মানো একটি শিশুকে খুঁজে বার করে বাবার হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস সিভগ্ননমন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের। হাইকোর্টের নির্দেশে শনিবার থেকেই প্রতিদিন বেলা ১২ টায় আমেরিকা থেকে ছেলে ভার্চুয়াল কথা বলতে পারবে বাবার সঙ্গে।
২০১৪ সালে কলকাতায় বিয়ে হয় প্রনভ খৈতান ও নেহা সিংয়ের। কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকতেন। ২০১৬ সালে উভয়ের সিদ্ধান্তে আমেরিকাতে সন্তানের জন্ম দেন। তারপর থেকে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। সেখানকার এক বাসিন্দা তথা প্রতিবেশী আদালতে মামলা করেন। ছেলেকে নিয়ে মা ভারতে চলে আসেন।
বাবা গুগলের ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে তিনি রয়েছেন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতে। স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে রয়েছেন ওড়িশাতে। ছেলেকে নিজের কাছে পেতে বাবা আমেরিকা আদালতের দ্বারস্থ হন। সেখানের আদালত ছেলেকে বাবার কাছে ফেরাতে নির্দেশ দেয় ২০১৯ সালে। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার জন্য ভারতের আইনমন্ত্রী, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা (FBI), পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী, দুই রাজ্যের ডিজিদের সাহায্য করার কথা বলে আদালত। কিন্তু মাঝে স্ত্রী কোথায় আছেন, তার খোঁজ না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ‘হেভিয়াস করপাস’ মামলা করেন স্বামী। সেই মামলার শুনানি ছিল এদিন।
আরও পড়ুন: Bidhannagar Mayor: বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণাই, চেয়ারম্যান সব্যসাচী
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘নিজেদের ইগোর মাঝে ছেলেকে আনবেন না। আইন লড়াই করছে, কিন্তু সন্তানকে মাঝে টানবেন না’। আদালতের নির্দেশ, বাবা প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট ভিডিও কলের মাধ্যমে ছেলের সঙ্গে ভাল সময় কাটাবেন। সেখানে আইনজীবীরা থাকলেও কল ‘মিউট’ থাকবেনা। এই নির্দেশ বাস্তবায়িত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এদিন শুনানিতে আইনজীবীদের পাশাপাশি স্বামী স্ত্রী দুজনেই ভার্চুয়াল শুনানিতে ছিলেন। সঙ্গে ছিল বছর ছয়ের সন্তান।