নয়াদিল্লি: বন্দিবৃক্ষ। ১২৫ বছর আগে শৃঙ্খলিত এই গাছ। আজও যার বন্দিদশা ঘোচেনি। গোরা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া এই গাছ পরাধীনতার নাগপাশে বন্দিত্বের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে।
চমকে উঠলেও সত্যি! যদি কেউ অপরাধ করে, তাহলে আইন তাকে শাস্তি দেয়। চুরি, ডাকাতি বা অন্য যে কোনও অপরাধই মানুষের উপর প্রযোজ্য। পশুপাখির উপর নয়। কিন্তু, একটি গাছ ব্রিটিশ রাজশক্তির সেই নির্যাতনের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু দাঁড়িয়ে রয়েছে নয়। চারধার থেকে মোটা শিকলে বন্দি করে রাখা হয়েছে তাকে। ১২৫ বছর ধরে।
আরও পড়ুন: তোমাদের সঙ্গে গুলি-বন্দুক ছিল না, সিবিআইকে প্রশ্ন বিচারপতির
কী তার অপরাধ?
এ পর্যন্ত শুনে নিশ্চই চোখ কপালে উঠেছে! এবার পুরো ঘটনাটা জানলে মাথা বনবন করে ঘুরতে শুরু করবে। ভাবছেন গাছকে কীভাবে গ্রেফতার করা যায়? তার অপরাধই বা কী? তাহলে শুনুন গপ্পটা।
তখন ব্রিটিশরাজ চলছে। বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ারের তোরখান সীমান্ত লাগোয়া লন্ডি কোটাল থানা এলাকার ঘটনা। একদিন জেমস স্কুইড নামে এক গোরা পল্টনের অফিসার প্রচুর মদ খেয়ে মত্ত হয়ে যান। ওই অবস্থায় তিনি গাছকে তাঁর পিছুপিছু আসার নির্দেশ দিলে সে তা মানতে পারেনি। এটাই তার অপরাধ।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাবিলদারদের বলেন, ও আমার নির্দেশ শুনছে না। বারবার পালিয়ে যাচ্ছে। ওকে এখনই গ্রেফতার করো। সেনারা তাঁর মত্ত অবস্থার কথা বুঝলেও নির্দেশমতো বাধ্য হয়ে শিকল দিয়ে বেঁধে গ্রেফতার করে। সেই থেকে এই মামলা আর আদালতেও ওঠেনি। বন্দিদশাও ঘোচেনি হতভাগ্য বৃক্ষের।
পরবর্তীকালে গাছের গায়ে একটি কাঠের টুকরোয় লেখা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। যাতে গাছটি বলছে, আমি গ্রেফতার হয়ে আছি। বর্তমানে খাইবার রাইফেলসের অফিসারদের মেস চত্বরে গাছটি রয়েছে। যা পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় একটি স্থান।
স্থানীয়রা কী বলেন?
প্রতিদিন পর্যটকরা গাছটি দেখতে এলেও স্থানীয়রা বলেন, এটা আসলে ইংরেজদের ভারত শাসনের একটি নমুনা। এই গাছটি দেখিয়ে এখানকার আদিবাসীদের ব্রিটিশ শক্তি তাদের ক্ষমতা জাহির করত। বুঝিয়ে দিত তাদের বিরোধিতা করলে ফল কী হবে।
অন্য খবর দেখুন