হুগলি: দীর্ঘ ১৭ দিন পর অপেক্ষার অবসান। মঙ্গলবার অবশেষে তাঁকে-সহ ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উত্তরকাশীর সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে (Uttarkashi are Trapped in Tunnels) ছিলেন পুরশুড়ার (Hooghly Purshura) সৌভিক পাখিরা (Purshura Souvik Pakhira) এবং জয়দেব প্রামাণিক। আটক ছিলেন কোচবিহারের মাণিক তালুকদারও। বাকি ৩৮ জনের সঙ্গে এই তিনজনকেও মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করা হয়। হুগলি এবং কোচবিহারে তিন জনের গ্রামেই রাতে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। অত রাতে শীতের মধ্যে শয়ে শয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। সকলের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, মুখে ভারতমাতা কী জয় স্লোগান। পরিবারের মহিলারা শঙ্খ এবং উলুধ্বনি দিয়ে তিনজনের মঙ্গল কামনা করেন। বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানো হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতেও কোচবিহার এবং হুগলিতে তিনজনের বাড়িতেই ছিল মানুষের ভিড়। পরিবারের সদস্যরা তিনজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে নিশ্চিন্ত হন।
৪০০ ঘণ্টারও বেশি লড়াই ‘অপারেশন জিন্দেগি’র (Operation Zindagi)। আর এই মৃত্যুকূপে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের নায়করা হলেন মধ্যপ্রদেশের ৬ ব়্যাটহোল মাইনার্স (Real Hero 6 Miners of Operation Zindagi)। মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়ার খবর আসতেই শ্রমিকদের বাড়িতে বাড়িতে শঙ্খধ্বনি বেজে ওঠে। দুই যুবকের বাড়িতে পাড়া প্রতিবেশীরা ভিড় জমিয়েছেন। টিভি ও মোবাইলে চোখ রেখেছেন এলাকার বাসিন্দারা। পাশাপাশি এলাকার মানুষ রীতিমতো প্রার্থনা শুরু করেছেন সৌভিক ও জয়দেব যাতে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফেরে।
আরও পড়ুন: অপারেশন জিন্দেগি’র আসল হিরো ৬ খনি শ্রমিকের মাথাতেই বিজয় মুকুট
দীপাবলির দিন থেকে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ধসে আটকে ছিলেন হুগলির বাসিন্দা সৌভিক পাখিরা। ছেলের সঙ্গে দীর্ঘ ১৭ দিন পর ফোনে কথা বললেন তাঁর মা লক্ষ্মী পাখিরা। উদ্ধার হওয়ার খবর আসতেই উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয় পুড়শুড়ার দুই পরিবারে। আনন্দে কেঁদে ফেলেন সৌভিক ও জয়দেবের মা ও বাবা সবাই। উদ্ধার হওয়ার পরেই সৌভিক তার মা কে ফোন করে এবং কথা বলে। প্রতিবেশীরা হাসি মুখে সৌভিকের মা কে ঘিরে ধরে। এই বিষয়ে সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিরা বলেন,ছেলে কথা বলেছে। শরীর ঠিক আছে বলেছে। বুকের ভিতর থেকে একটা পাহাড় নেমে গেল। সৌভিককে সুস্থ ভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। এবার ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসার পালা।
অপরদিকে জয়দেব পরামানিকের ঘরেও উৎসব চলছে। আরামবাগের সাংসদ অরুপা পোদ্দার জয়দেব প্রামানিকের বাড়িতে যান এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ঈশ্বরের কৃপায় ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে। ১৭ দিনের লড়াইয়ে আমরা জিতেছি। সৌভিক ও জয়দেব প্রামানিক সুস্থভাবে উদ্ধার হওয়ায় ওদের পরিবারের পাশাপাশি আমরা ভীষণভাবে খুশি। সবমিলিয়ে এখন ঘরের ছেলের ফেরার অপেক্ষায় পরিবারের সদস্য থেকে গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও অন্য খবর দেখুন