Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeScrollশীতের আমেজে শিল্পী বিনোদ বিহারীর ছোঁয়া

শীতের আমেজে শিল্পী বিনোদ বিহারীর ছোঁয়া

বাংলা তথা ভারত-মানসে প্রবাদ প্রতিম

Follow Us :

কলকাতা: বেহালার ৭ বছরের শিশু গেল শান্তিনিকেতনে (Santiniketan)। বাঁ চোখটায় এমনিতেই কম দেখে। শিক্ষাগুরু, কলাভবনের নন্দলাল নিয়ে গেলেন রবীন্দ্রনাথের কাছে, তিনি বললেন, “নিজের মত আঁকতে দাও,ফেলে দিওনা”। সনাতন চরিত্রসব, সনাতনী আঁকার শৈলী শেখার বদলে আটপৌরে জীবন, শান্তিনিকেতনের তালসারি, তার আঁকায় উঠে এল চারপাশ। সৃষ্টি হল ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাসে ল্যান্ডস্কেপের নতুন ভাষা। দেশিকোত্তম, পদ্মবিভূষণের সুনাম পেরিয়েও তিনি শিল্পী। পঞ্চাশ পার হতে না হতেই হলেন সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন। প্রাণপাখি তার গেয়ে উঠল ‘মাভৈ’। রঙিন কাগজ কেটে,জুড়ে সৃষ্টি করে চললেন নতুন নতুন ছবি, শান্তিনিকেতনে, হিন্দি ভবনের দেওয়াল জোড়া আধুনিক দেওয়ালচিত্র।

শিল্পী বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়ের (Vinod Bihari Mukhopadhyay) কথা হচ্ছে। তাঁর জন্ম কলকাতার বেহালায়। অবশ্য আদি বাড়ি ছিল হুগলির গরলগাছায়। পিতা বিপিন বিহারী মুখোপাধ্যায়। মায়ের নাম অপর্ণা। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে বিনোদ বিহারী ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন পরিবারের সবাই। চোখের গভীর সমস্যা নিয়ে জন্মেছিলেন। প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাসের বিনোদবিহারী ভর দিয়েই একজন মহান শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হন। বেহালার যদু কলোনিতে চলছে মেল এই “শীতের আমেজে”, রকমারি দোকান, পসরা, খাওয়ার চমকপ্রদ স্বাদের মাঝে, চোখে লেগে রইল বিনোদ বিহারীর ছবির পর ছবি। অনাস্বাদিত এই শিল্প,স্টুডিও,আর্ট কলেজ,নিলাম, প্রর্দশনীর বাইরে,সহজে সবার কাছে পৌঁছানোর এই প্রক্রিয়ায়,মেলাটা যেন উল্কির মত দেহে পরে আছে বিনোদ বিহারীর ছবি।

ছায়া ফেলেছে এই মাটিতেই জন্মানো এক মহীরূহ যা বেহালা, বাংলা তথা ভারত-মানসে প্রবাদ প্রতিম।
নবারুণ সঙ্ঘ “শীতের আমেজে” তার ক্ষীণ দৃষ্টি এবং দৃষ্টিহীন অবস্থায় আঁকা ছবির সাথে সম্পূর্ণ অন্য পরিবেশে দেখা হওয়ার স্বাদই অন্যরকম। সত্যজিৎ যখন বিনোদ বিহারীর ওপর ‘ দ্য ইনার আই’ নামের তথ্যচিত্র করেন তখন তিনি দৃষ্টিহীন,অথচ ততদিনে সত্যজিতের আঁকার মাস্টার নিজেই আধুনিক চিত্রকলার একজন ‘ম্যায়স্ট্রো’।একটা প্রবাদ মিশে যাচ্ছে আর একটা প্রবাদে। সত্যজিতের আঁকা-ঝোকা,বই ,গল্প, উপন্যাস অলঙ্করণ,বিজ্ঞাপণ, সিনেমার স্টোরি বোর্ড সবেতেই তার আঁকা শেখার মাস্টারের ছায়া।

আরও পড়ুন: প্রতিবেশী যুবকের অত্যাচারে ঘর ছাড়া মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

সেই গল্পই আমরা জানলাম ২০শে জানুয়ারি,২০২৩, শনিবার,সন্ধে ৭টায়,মেলা উদ্বোধনের দিন, উজ্জ্বল চক্রবর্তীর কাছে।দীর্ঘ ২০ বছর উনি সন্দেশ পত্রিকার অলঙ্করণ করেছেন সত্যজিৎ এর সান্নিধ্যে।এক প্রবাদ বিনোদ বিহারী মিশেছিল অন্য প্রবাদ সত্যজিৎ-এ , এই দুই প্রবাদ প্রতিম এর গল্প তার মুখে। ২৬ শেষ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা মেলাটা আঞ্চলিক ইতিহাসের কথাই বলছে।বলছে এই শহর কেন কলকাতা শহর, আর কেন পল্লীতে এখানে প্রবাদপ্রতিম মানুষের ছড়াছড়ি।

মেলায় আমাদের পরিচয় হল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে।উনি শুধু প্রথিতযশা একজন সাইকিয়াট্রিস্টই নন, যদু কলোনির এই মানুষটি নিজেও নামি চিত্রকর, আধুনিক চিত্রকলার শিল্পী।সম্পর্কে বিনোদ বিহারীর নাতি, ওনার একটা বই আছে নাতি দেবাশীষ বাবুকে লেখা দাদু বিনোদ বিহারীর প্রায় ৬০ টা চিঠি নিয়ে।

এক পৌষক্রান্তির মেলায় এতটা আশা করিনি। যেমন আশা করিনি দক্ষিণ পল্লী নবারুণ সংঘের ১১তম বর্ষের এই মেলায় তাদের সামাজিক কাজের নিদর্শনে থাকবে একটা ‘ফ্যাশন শো’ যেটা বিশেষভাবে সক্ষমদের নিয়ে তৈরী।থাকবে একটা নাটক ‘ইনসান’ যেটা বিশেষভাবে সক্ষমরা সৃষ্টি করছে।পাশাপাশি একই মাত্রায় বিভিন্ন আশ্রমের শিশুদের হাতের ছোঁয়ায়,এই সব অনুষ্ঠান, অন স্টেজ অফ স্টেজ, চমকপ্রদ। মেলার অন্য আকর্ষণ বাৎসরিক আনন্দ উপাচার, অঞ্চল কেন্দ্রিক মেধাবীদের নাচ-গান, মুখে জল আনা নানান খাবার।আছে বাঙলার বিশিষ্ট শিল্পীদের অনুষ্ঠান।

আরও অন্য খবর দেখুন 

 

RELATED ARTICLES

Most Popular