এ যেন বামেদের অক্সিজেন পাওয়ার মঞ্চ। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নামল এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। সাম্প্রতিক সময়ে বামেদের কোনও সমাবেশে এত বিপুল জনসমাগম দেখা গিয়েছে কি না তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আলোচনা। জল্পনা।
গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে একটু একটু করে নিজেদের জমি পাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বামেরা। প্রথমবার নজরে এসেছিল ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু তদন্তের দাবি ঘিরে আন্দোলন। হাওড়ার এই ছাত্রনেতার মৃত্যুর পর থেকেই পথে নেমেছিল এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। মঙ্গলবারের ইনসাফ সভারও মূল দাবি, আনিস খানের মৃত্যু তদন্ত। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার। আইনত ব্যবস্থা। শুধু আনিস নন, বেশ কয়েক বছর আগে এক প্রতিবাদ আন্দোলনে মারা যান আর এক ছাত্র নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত। বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের দাবি, প্রতিবাদ আন্দোলনে পথে নামা তরুণ ছাত্র নেতাদের মৃত্যুর দ্রুত তদন্ত চাই।
আরও পড়ুন: অপহরণ করে শিশু খুনের অভিযোগ শান্তিনিকেতনে, অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন
মৃত্যু তদন্তের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বামেরা। বিশেষ করে চাকরি না পাওয়া, শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি-সহ একাধিক ইস্যুতে সরব হয়েছে তারা। ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এদিনের সভা থেকে বলেন, অবিলম্বে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে। চাকরির দাবিতে যেসব আন্দোলনকারী বছরের পর বছর রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন তাদের অবিলম্বে চাকরি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন বাম নেতারা।
প্রায় এক মাস ধরে আজকের প্রতিবাদ-আন্দোলনের প্রস্তুতি চালাচ্ছিলেন বামেরা। গত বিধানসভা ভোটে শূন্য পাওয়া বাম মিছিলে সমাবেশ ছিল দেখার মতো। প্রথমে ওয়াই চ্যানেল সমাবেশের জন্য নির্ধারিত থাকলেও জমায়েত এতটাই বেশি আকার ধারণ করে শেষ পর্যন্ত সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে হয়। পুলিশ বাম ছাত্র-যুবদের মঞ্চ পর্যন্ত বাঁধতে দেয়নি। শেষে ধর্মতলায় কোনওরকমে অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে সমাবেশের কাজ চলে।
আরও পড়ুন: Narayan Rane: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানের বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ, জরিমানা আদালতের
ঠিক যেখান থেকে একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশ করে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আজকের প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য সেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে জায়গাটা বেছে নেওয়া হয়। বামেদের বিপুল সমাবেশে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এদিনের সভা থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, অবিলম্বে এই দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্য সরকারের পতন দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে হবে। গরু-কয়লা দুর্নীতি বিপুল আকার ধারণ করেছে রাজ্যে। এর বিরুদ্ধে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে বামেরা। সেলিম কর্মসংস্থানের দাবিতে সুর চড়িয়ে বলেন, অবিলম্বে চাকরি দিতে হবে। মিছিল, মিটিং বন্ধ করে সরকার মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবে না বলে হুঙ্কার ছাড়েন সেলিম।