নয়াদিল্লি: ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগের পর ভয় পাচ্ছেন এদেশের মেয়ে কুস্তিগির (Female Wrestlers) এবং তাদের পরিবাররা। প্রতিযোগিতায় অভিভাবক সঙ্গে নিয়ে যাওয়া থেকে এই ক্রীড়ায় বেশি করে মহিলা আধিকারিক নিয়োগ সহ একাধিক সংস্কারের দাবি করেছেন তাঁরা।
এই মাসেই ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা এবং হুমকির মামলা গ্রহণ করেছিল বিচারাধীন আদালত (Trial Court)। কিন্তু বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিবাদের নিজেদের পদক গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার সংকল্প করেন আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা কুস্তিগিররা। নিজেকে বার বার নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ব্রিজভূষণ।
এই সমস্ত কিছু নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তরুণ মহিলা কুস্তিগির এবং তাঁদের পরিবারবর্গ। হরিয়ানার দুই কিশোরী কুস্তিগির দীপিকা এবং ইশাংশুর মা মোনা দাহিয়া বলছেন, “এটা চরম দুঃখজনক বিষয়। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ঠিকই করেছেন কুস্তিগিররা।” তিনি আরও বলেন, “যদি দেশের সেরা কুস্তিগিরদেরই এই অভিজ্ঞতা (যৌন হেনস্তা) হয় তাহলে তা তো আমাদের মেয়েদের সঙ্গেও ঘটতে পারে।”
আরও পড়ুন: Stadium Bulletin | বিশ্বকাপের পর আর ম্যাচ পাবে না ইডেন?
দাহিয়ারা সহ ন’জন মহিলা কুস্তিগিরদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। কুস্তি ছেড়ে দেবেন না তাঁরা, এ নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বরং জুলাইয়ে কুস্তি ফেডারেশনের নির্বাচনে পরিচালনতন্ত্রে ব্যাপক সংস্কারের দাবি তুলতে চলেছেন তাঁরা। যে সংস্কারে নিরাপত্তা পাবেন ৫৩ হাজারেরও বেশি তরুণ মহিলা কুস্তিগির।
অনেকেই চাইছেন, কুস্তি ফেডারেশনে বেশি করে মহিলা আধিকারিক নিয়োগ করা হোক। দুই দাহিয়া বোনের বাবা বীরেন্দ্র সিং বলছেন, “পুরো সিস্টেমটাই পুরুষে ভর্তি। মেয়েদের নিরাপদ বোধ করতে মহিলাদের নিয়োগ করতে হবে। আমরা আমাদের মেয়েদের হিরো হয়ে উঠতে দেখতে চাই, হেনস্তার শিকার হতে দেখতে চাই না।”
কারও মতে, মহিলা প্রতিযোগীদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য অভিভাবকদের একটা আনুষ্ঠানিক দল গড়া হোক। সেই দল ট্রেনিং ক্যাম্প, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যাবে। ২০২৪ সালের অলিম্পিক্সের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এক মহিলা কুস্তিগিরের বাবা আহলাওয়াত বললেন, “আমার মতো অভিভাবকরা ভয় পাচ্ছি, তবে আমাদের এবার নজরদারি বাড়াতে হবে, কোনওভাবেই আমাদের মেয়েদের একা ছাড়া যাবে না।”
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ভারতের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ (SAI) এবং কুস্তি ফেডারেশন মুখ না খুললেও, পরিচালনতন্ত্রে মহিলা আধিকারিকের অভাবের কথা মেনে নিয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) বলেছেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, প্রত্যেকটি মেয়ে নিরাপদ বোধ করবে। মহিলা কুস্তিগিরদের সমস্ত দুশ্চিন্তার প্রতি নজর দেওয়া হবে।