নয়াদিল্লি: আরব সাগরের (Arabian Sea) বুকে ফুঁসছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় (Cyclone Biparjoy)। আগামিকাল বৃহস্পতিবারই ল্যান্ডফল হতে চলেছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুরে গুজরাতের কচ্ছ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। এরপরে তা পাকিস্তানের দিকে অগ্রসর হবে। স্থলভাগে প্রবেশের আগেই কিছুটা শক্তি হারিয়েছে ঘূর্ণিঝড়। প্রবল থেকে বর্তমানে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে স্থলভাগে প্রবেশ করার পর এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় গুজরাতের পশ্চিম উপকূল এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে সক্রিয়ভাবে প্রভাব ফেলছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে সে রাজ্যের প্রশাসন। কেন্দ্রীয় সরকারও সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের নীচু এলাকাগুলি থেকে ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী দলকে।
#WATCH | High tide waves hit Mumbai as cyclone ‘Biporjoy’ intensifies
(Visuals from Gateway of India) pic.twitter.com/C1vhrHiWZS
— ANI (@ANI) June 14, 2023
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে মৌসম ভবনের তরফে একাধিক রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গুজরাত, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও লাক্ষাদ্বীপে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (Heavy Rains) সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গুজরাতে ঘূর্ণিঝড়টি ল্যান্ডফল করতে চলেছে, তাই ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাও সবথেকে বেশি। আগামী ১৬ জুন অবধি সমস্ত বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মৎসজীবীদেরও আগামী দুইদিন সমুদ্রে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
#WATCH | High tidal waves hit Gujarat as cyclone ‘Biporjoy’ intensifies
(Visuals from Dwarka) pic.twitter.com/J6KfqJZmJd
— ANI (@ANI) June 14, 2023
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের বেশকিছু রাজ্য বর্ষার (Monsoon) পথে খানিকটা বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় সক্রিয় ছিল, যার ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই সিস্টেমগুলি যখন পূর্ব এবং পশ্চিমে একটি নাটকীয় আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, তখন বড় প্রশ্ন হল বর্ষার কী হবে। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় কী সারা দেশে বর্ষার অগ্রগতিতে ব্যাপক ক্ষতি করছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল, বিপি যাদব ব্যাখ্যা করেছেন, “ঘূর্ণিঝড় সিস্টেমটি সমস্ত আর্দ্রতা শুষছে, তাই আর্দ্রতা আরব সাগর থেকে কেরালা, কর্ণাটক এবং অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলে যাচ্ছে না। কেরালায় বর্ষা শুরু হয় সাধারণত শক্তিশালী। যেসব এলাকায় ইতিমধ্যে বর্ষা এসে গিয়েছে সেসব এলাকায়ও বর্ষার প্যাটার্ন নেই। বর্ষা এলেই মেঘের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের দিকও পরিবর্তিত হয়, যা বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা যায় না।” উল্লেখযোগ্য ভাবে, কেরালায় বর্ষার আগমন প্রায় আট দিন দেরিতে হয়েছিল এবং শুরু হওয়ার পরেও, সিস্টেমটি প্রত্যাশার চেয়ে ধীর গতিতে চলছে। একই সময়ে, পূর্ব উপকূলের কাছাকাছি গড়ে ওঠা আরেকটি সিস্টেম মৌসুমী বায়ুর অগ্রগতিতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া বিদরা জানাছে, ঘূর্ণিঝড় উত্তর দিকে সরে যায়, তখনই এই রাজ্যগুলিতে বর্ষার আগমন ঘটে। এখন, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আরব সাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে সক্রিয় রয়েছে এবং ১৫ জুন গুজরাট উপকূলে ল্যান্ডফল করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, পাকিস্তান এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমাঞ্চলে সক্রিয় শুষ্ক বাতাসের কারণে ঘূর্ণিঝড়টি ল্যান্ডফলের পরে অবিলম্বে দুর্বল হয়ে পড়বে। যা দ্রুত এর তীব্রতা কমাবে। ঘূর্ণিঝড়ের উপস্থিতির কারণে, সারা দেশে অপ্রতিরোধ্যভাবে পশ্চিমী বায়ুর রয়েছে। যদি বঙ্গোপসাগরে একটি মৌসুমী ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তবে এটি পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার মতো মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে হবে। সুতরাং, বঙ্গোপসাগরে একটি ট্র্যাফের কারণে বর্তমানে যে সিস্টেমটি বৃষ্টি হচ্ছে তা একটি প্রাক-মৌসুমি ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। আইএমডির সিনিয়র বিজ্ঞানী আর কে জেনামানির ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তিনি দাবি করেন, “বিপর্যয়ের ধীর গতি আসলে বর্ষার অগ্রগতিতে সাহায্য করবে।