এক আদন্ত্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অঙ্গ হিসেবেই, ২০০ দিন কবেই কেটে গিয়েছে, কৌস্তুভ রায় এখনও জেলেই। উনি জানিয়েছেন ওনার মামলা উনিই লড়বেন, উনিই বলবেন মাই লর্ডশিপ, কেবলমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্যই আমাকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। আমি মুক্তির আবেদন করব না, জামিনের আবেদন করব না, একজন নাগরিক হিসেবে আমি সুবিচার চাইব, জাস্টিস, যা আমার মৌলিক অধিকার। তো উনি বলুন ওনার কথা আদালতের চার দেওয়ালের মধ্যে ওনার ভাষা শাণিত হোক, যুক্তি দিয়ে উনি বোঝান ধর্মাবতারদের যে কেন এই গ্রেফতারি আদতে এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।
কিন্তু আমরা? আমরা কাকে বলব, ওই সমস্ত আদালতের চেয়েও অনেক বেশি ক্ষমতাশালী, অনেক বেশি বুদ্ধিমান, অনেক বেশি সংখ্যা তাঁদের, সেই মানুষের কাছে আমরা আমাদের মতো করেই সওয়াল করব। না মাননীয় ধর্মাবতার, আমরা আদালত, আইন-কানুনকে সন্মান করি, আমরা আপনাদের কাজে চার আনার দখলদারিতেও বিশ্বাসী নই। আমরা আমাদের কথা বলব মানুষের কাছে, যে মানুষের আঙুলের চাপে সরকার গড়ে সরকার ভাঙে, যে মানুষ প্রবল প্রতাপশালীদের প্রাসাদ গড়ে এবং ভাঙে, যে মানুষের নিত্য জয়গান শোনা যায় ধানের খেতে, কলে কারখানায়, মাঠে বন্দরে। সেই জনগণেশের কাছে আমাদের সওয়াল শুরু আজ থেকে, একটা একটা করে পেঁয়াজের পরতের মতো মিথ্যেগুলো ছাড়াতে ছাড়াতে দেখিয়ে দেব শেষে ওই অভিযোগের তিলমাত্র ভিত্তি নেই। হাত জোড় করি ওই প্রচণ্ড শক্তির কাছে, দয়া করে শুনুন। হাত জোড় করি বাগদেবীর কাছে, প্রতিটা সত্য বলার ভাষা জুগিয়ে যান। হাত জোড় করি ধর্মের কাছে যা শাশ্বত, যা চিরটাকাল অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সত্যের পক্ষে শেষ ভরসা হিসেবেই থেকে যান।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৬)
আমাদের গল্পের শুরু এক এফআইআর থেকে, ২ নভেম্বর ২০১৭তে রাজস্থানের জয়পুরে এক এফআইআর দায়ের করা হয়। মূলত টাকা তছরুপ, চিটিংবাজি, চিটফান্ডের মাধ্যমে মানুষের টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া ইত্যাদি ধারায় অভিযোগের ভিত্তিতে ওই জয়পুর থেকেই গ্রেফতার করা হয় পিনকন স্পিরিটস লিমিটেডের মালিক মনোরঞ্জন রায়কে। এফআইআর ছিল আমাদের রাজ্যের খেজুরি থেকেও, তার বহু আগেই করা, ১৯ জানুয়ারি ২০১৭তে দায়ের করা আর এক এফআইআরেও একই অভিযোগ ছিল, সেটাও এই গ্রেফতারির সঙ্গে জোড়া হল। যথারীতি সার্চ হল, রেড হল বিভিন্ন দফতরে, বিভিন্ন ডকুমেন্টস সিজ করা হল, সেসবের ভিত্তিতে মামলা চলতে লাগল। ২০২০-তে ৩ অক্টোবর বিচারকেরা রায় দিলেন, আজীবন কারাবাসের রায় ঘোষণা হল। সে রায়ে কী বলেছিলেন বিচারকেরা, আসব সে কথায়। কিন্তু এতবড় এক মামলায় যেখানে অপরাধীর আজীবন কারাবাসে সাজা শোনানো হচ্ছে যা প্রায় তিন বছর ধরে চলল, সেই মামলাতে কোনও দলিল দস্তাবেজে কি একবারের জন্য কৌস্তুভ রায়ের নাম বা তাঁর অন্য কোনও কোম্পানির নাম এসেছে? না, আসেনি। কোনও এক চিলতে কাগজেও এরকম কোনও তথ্য নেই। সেসব দলিল দস্তাবেজ আদালত দেখেছে, বাদী, বিবাদী পক্ষের উকিলেরা সেসব দস্তাবেজ নিয়ে সওয়াল করেছেন। না, একবারও সেই দলিল দস্তাবেজের কোথাও না ছিল কৌস্তুভ রায়ের নাম, না তাঁর কোনও কোম্পানির নাম। তো সেই দলিল দস্তাবেজ দেখে বিচারকেরা কী বলেছিলেন? বলব, পড়তে থাকুন আমাদের প্রতিবেদন কারার ওই লৌহকপাট।
দেখুন ভিডিও: