দীপ্তিমান ভট্টাচার্য: ত্রিপুরা (Tripura Assembly Vote 2023) জয়ে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে চলেছে বিজেপি (BJP)। তাই বাংলার (West Bengal) আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারকে শিকেয় তুলে রেখে ত্রিপুরায় এরাজ্য থেকে ৩৫ জন নেতানেত্রীকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। ত্রিপুরা মূলত বাংলাভাষী রাজ্য। তাই সেখানে হিন্দিভাষী প্রচারকদের জায়গায় বাঙালি প্রচারকদেরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। ত্রিপুরার রাজনীতিতে বিজেপির প্রধান বিরোধী দল বাম (Left) ও কংগ্রেস (Congress)। তবে গতবছর থেকে ত্রিপুরার মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। সে কারণে ত্রিপুরার ভোটে বাঙালি প্রচার কার্যকর্তাদের বাছাই করে বিজেপি বুঝিয়ে দিতে চাইছে, আরও একবারের জন্য ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া পদ্ম শিবির।
এই রাজ্য বিজেপি থেকে ৩৫ জনকে পাঠানো হচ্ছে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে। বিস্তারক হিসেবে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে ওই রাজ্যে। এই বিস্তারক দলে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বিধায়ক, রাজ্য এবং জেলার পদাধিকারীরাও রয়েছেন। ৬০ বিধানসভা আসনের ত্রিপুরায় এই বিস্তারকদের ৩৫টি কেন্দ্র ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এই দলে ১৮ জন বিধায়ক রয়েছেন।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছে, নির্বাচনের প্রচার শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বাঙালি নেতানেত্রীদের সেখানে জানপ্রাণ দিয়ে পড়ে থাকতে হবে। প্রসঙ্গত, এদিনই ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI) উত্তর-পূর্ব ভারতের তিন পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ভোটের দিন ঘোষণা করেছে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে ভোটগ্রহণ হবে। ফল ঘোষণা ২ মার্চ।
এদিনই মেঘালয়ে গিয়ে ভোটের দামামা বাজিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ত্রিপুরা ভোটের আগে তাঁরাও সেখানে প্রচারে যাবেন। তৃণমূলের রাজ্যস্তরের নেতারাও সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকবেন বলে অনুমান। এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তাই বাংলা বিজেপির বাছাই করা নেতাদের পার্বত্য রাজ্যে শিবির গড়তে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির নেতৃত্ব।
যদিও রাজ্য বিজেপির অন্দরে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত অনেকটা নিজের ঘর ছেড়ে পড়শির বাড়ি পাহারা দেওয়ার মতো। নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে যতদিনে ত্রিপুরার ভোট হবে, ততদিনে এরাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। ফলে এটা নিশ্চিত যে, এখানে প্রচারে প্রভাব পড়বে। কিন্তু, রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মত হচ্ছে, বিজেপির কাছে পাখির চোখ হচ্ছে ত্রিপুরা বিধানসভায় ক্ষমতায় ফেরা। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Vote) আগে এবছরই দেশের মোট ৯ রাজ্যে ভোট রয়েছে। যার মধ্যে ক্ষমতায় থাকা রাজ্য ত্রিপুরা অন্যতম। ফলে, সেখানে যদি পাশা উলটে যায়, তাহলে বিজেপির মুখ পুড়বে তা বলাই যায়।