ফের কলকাতা টিভির উপর আক্রমণ। এবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক কলকাতা টিভির লাইসেন্স রিনিউ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায় রয়েছে। সেই রায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা টিভির সম্প্রচার বন্ধ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায় টুইটে কেন্দ্রের এই হুমকির কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের কণ্ঠরোধ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সক্রিয় হয়েছে। তাদের একটাই অভিপ্রায়, হয় আপস কর, নতুবা ফল ভোগ কর। কৌস্তুভ রায় পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। কোনও আপস নয়। সিবিআই, ইডির পর এবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।
গত অগাস্ট মাসেই কলকাতা টিভির উপর আক্রমণ নেমে এসেছিল। আয়কর দফতর ১৬ অগাস্ট থেকে টানা প্রায় ৮০ ঘণ্টা কলকাত টিভির সমস্ত অফিসে তল্লাশি চালায়। সাংবাদিক, অসাংবাদিক কর্মীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়, মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়, এমনকী খবর সম্প্রচারেও বাধা দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। সংস্থার সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের বাড়ি-সহ একাধিক পদস্থ কর্তার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। রেহাই পাননি তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অমিত জাজোদিয়া, মুখ্য সঞ্চালিকা সুচন্দ্রিমা পালের বাড়িতেও হানা দেওয়া হয়। বিভিন্ন অফিস এবং বাড়ি তল্লাশির নামে কার্যত তছনছ করা হয়। কিন্তু চারদিন ধরে তল্লাশি চালিয়েও আয়কর দফতর আপত্তিজনক কিছুই পায়নি।
আয়কর দফতর ১৭ অগাস্ট কৌস্তুভ রায়ের পরিবার-সহ বেশ কয়েকজনের ব্যাঙ্ক লকার সিল করে দেয়। তিনদিন আগেই ওই দফতর লকারগুলি চালু করার কথা জানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্টদের। বলা চলে, আয়কর দফতর এক প্রকার পিছু হঠেছে। তারপরেই এবার এল কলকাতা টিভির মুখ বন্ধ করার নতুন অস্ত্র। কলকাতা হাইকোর্টের রায় অমান্য করেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সিকিওরিটি ক্লিয়ারেন্স নেই। তাই চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রের এই অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অরুণাভ ঘোষের মতো একাধিক প্রবীণ আইনজীবী। তাঁরা বলছেন, নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সংবাদমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। কলকাতা টিভি অবশ্য দমবার পাত্র নয়। তারা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। কৌস্তুভ রায় জানিয়েছেন, তাঁরা আদালত অবমাননার অভিযোগে ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। কলকাতা টিভি অন্তর্বর্তী নিরাপত্তাও পেয়েছে আদালতের কাছ থেকে। তারপরেও কেন এই পদক্ষেপ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কলকাতা টিভির সম্পাদক এই লড়াইতে সমস্ত সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিক, দর্শককে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফের আক্রান্ত কলকাতা টিভি, নিরাপত্তার অজুহাতে সম্প্রচার বন্ধের হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের
Follow Us :