হায়দরাবাদ: পরিবারের আপত্তি উড়িয়ে হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করেন মুসলিম ঘরের মেয়ে৷ যা মেনে নিতে পারেনি পরিবার৷ ছেলেটিকে খুন করে মেয়ের সেই ‘অপরাধের’ বদলা নিল পরিবার৷ ৪ মে রাতে হায়দরাবাদের সারুরনগর তেহসিলদার অফিসের বাইরে মেয়েটির স্বামীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর আত্মীয়ের বিরুদ্ধে৷ গোটা ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়৷ পুলিস জানিয়েছে, অপরাধীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে৷ তারা মেয়ের আত্মীয়৷ পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে খুন করা হয় হিন্দু ছেলেকে৷
মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে করেন ওই যুগল৷ পুলিস জানিয়েছে, দলিত ঘরের হিন্দু ছেলে নাগার্জুনের সঙ্গে স্কুল থেকে প্রেম সুলতানার৷ দুই পরিবারই এই সম্পর্কের কথা জানত৷ তবে এই ভিনধর্মের সম্পর্কের ঘোরতর বিরোধী ছিল তারা৷ তা সত্ত্বেও গত ৩১ জানুয়ারি হায়দরাবাদের আর্য সমাজ মন্দিরে সুলতানাকে বিয়ে করেন নাগার্জুন৷ বিয়ের পর নাম পরিবর্তন করে সুলতানা হন পল্লবী৷ কিন্তু এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি মেয়ের পরিবার৷ তারা নাগাড়ে নাগার্জুনকে খুনের হুমকি দিতে থাকে৷
৪ মে বাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন নাগার্জুন৷ তখনই তাঁর উপর হামলা করে একদল যুবক৷ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, লোহার রড দিয়ে নার্গাজুনকে পিটিয়ে মারছে হামলাকারীরা৷ স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে যান সুলতানা৷ হামলাকারীদের আটকানোরও চেষ্টা করেন তিনি৷ পথচলতি মানুষেরও সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি৷ বরং কেউ কেউ ঘটনাটি মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত ছিল৷ সুলতানা হামলাকারীদের আটকাতে গেলে তখন ভিড়ের মধ্যে থেকে কয়েকজন এগিয়ে যান বাঁচাতে৷ কিন্তু ততক্ষণে মারা যান নাগার্জুন৷ হামলাকারীরাও যায় পালিয়ে৷
এই ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসে নাগার্জুনের পরিবার৷ তারা রাস্তায় বিক্ষোভ দেখায়৷ নাগার্জুনের মৃত্যুর জন্য সুলতানার পরিবারকে দায়ী করে তারা৷ পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ায় বিজেপি৷ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন বিজেপি কর্মীরা৷ তেলঙ্গনার বিজেপি বিধায়ক রাজা সিং দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান৷ বলেন, ‘খুনের পরিকল্পনা পরিবার করেছে নাকি কোনও ধর্মীয় সংগঠনের উপদেশ মেনে তারা এমনটা করেছে তা খুঁজে বের করতে হবে পুলিসকে৷’
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা টুইটারে দলিত ছেলের খুনের নিন্দা করেন৷ লেখেন, হিন্দু স্ত্রীর পরিবার মুসলিম স্বামীকে এভাবে খুন করলে এতক্ষণে কী কী ঘটত? কংগ্রেস, আপ, টিএমসি, এসপি ইসলামফোবিয়ার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপুঞ্জে ছুটে যেত৷